মনুষ্য জন্ম
এই জীবন
এই মনুষ্য জন্ম যেন জন্মান্তরের ফাঁদ
ব্যাধের শরে শরশয্যায় শায়িত আছে হিসেব নিকেশ
তুমি কেন গুমরে কাঁদো এই অবেলায়
অবহেলার ভ্রুকুটি দিয়ে আমাকে ছুঁয়েছ পরিত্রাণ নেই
ত্রাণ শিবিরে শিবালিক পর্বত উঁচিয়ে
মূষিক মহিষ দাঁতে চিবোয় অহংকার
এই মনুষ্য জন্ম কোন্ জন্মের গলার হার!
ছেলেবেলার গদ্য
বাবা কালোজাম বানাবার জন্য
শুদ্ধ বনস্পতি ডালডা আনতেন
শৈশবের সেই অমল মধুর মধুময় দিনে
ছিনেজোঁক হয়ে যেন মন
মনের দুষ্টবুদ্ধি
চুরি করে ঘি ভেবে খেয়ে নিতো
ডালডার সামান্য ঢেলা-
আজ বাবা নেই সংসারে
কালোজাম দেখলেই
মনটা হয়ে ওঠে বিষণ্ণ বিধুর…
জলের মতো
জলের মতো জল গড়িয়ে যায়
যেন কারাবাস কাটিয়ে ফাটিয়ে মাটির গুমর উদোম নাচের ছন্দে কলস্বরে
শ্রুতিমান শ্রুতলিপি
দক্ষিণা প্রবহমান বাতাস…
জলের মতো জল গড়িয়ে যায়
যেন মুক্তোর হার!
লক্ষ্মণের গণ্ডির ভেতর এই যে জীবন
বিতংসের পরিধি ঘিরে ছুঁয়ে আছে মুখোশ
সূর্য সকাল নিয়ে সাত ঘোড়া এখনো নয়
নগ্ন-লগন
রাজনৈতিক হাহাকার
ডামাডোল যেন কাকরোল
যেন নিমফুল মুখে উড়ে যায় মানুষ
লক্ষ্মণের গণ্ডি
কাশফড়িং বুকে নিয়ে ছুটেছি মাঠের সবুজে অবুঝ ডালিম ভেঙে ব্যর্থ দানা
ডানা ভাঙা পরি…
লক্ষ্মণের গণ্ডি পেরোলেই মহাকাব্যের পাতা
দিনরাতের মায়ার বন্ধন ডোর…
তুমি
আমি কি তোমার মতো হতে পারবো কখনো
তুমি হাঁক দিলেই সূর্য ওঠে আকাশ পরিক্রমায়
তুমি গাইলেই বৃষ্টি ঝরে মেঘের কলস ভেঙে
রাঙা বৌটির মতো সজল চোখে
ছেড়ে যাও পিতৃনিবাস
তুমি কি সহজ গদ্যে ফিরবে কবিতায়
আমার অঙ্ক আমারি থাক
তুমি বিশ্রাম নাও
ফিক্ করে হেসে বলো
তুমি তোমার মতো হও…
সরস্বতী
সরস্বতী তুমি এমনি করে কাছে থেকো
স্বরবর্ণের লবণ সমুদ্রে ডুব দিয়ে তুলে এনো
ব্যঞ্জনবর্ণের মুক্তো
যেন ডিমের পোঁচে লেগে থাকে
গুলমরিচের ঝাল
সকাল ডিঙোতে ডিঙোতে নেমে আসে
সূর্য আঁধার
ছলনার মায়াজাল মহাকালে উলঙ্গ হলে
সরস্বতী তুমি এমনি করে কাছে থেকো
শাশ্বত শিল্পকলায়…