বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ বেড়ে ৯৫.৮৫ বিলিয়ন ডলার

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাড়তি উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুন মাসে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই বৈদেশিক ঋণ ৯৫.৮৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে সরকারি খাতে ৫৯.৯ বিলিয়ন ডলার দীর্ঘমেয়াদী ঋণ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ ধরনের বৃদ্ধি আগে কখনো হয়নি। এটি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। এমনিতেই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থায় রিজার্ভ অবনতির চাপে রয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে মন্দা দেখা দিয়েছে, এমন অবস্থায় আগামী দুই বছরের জন্য রিজার্ভ থেকে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অন্যান্য সরকারি খাতে উচ্চ সুদ হারের স্বল্পমেয়াদী ঋণ ২.৮৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ ২৫.৯৫ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদী ঋণ ১৭.৭৫ বিলিয়ন ডলার; এবং স্বল্পমেয়াদী বাণিজ্য ঋণ ১১.৯৬ বিলিয়ন ডলার।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, “২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে বাইরের দেশের ঋণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে, যা আগে কখনো ঘটেনি।”

- বিজ্ঞাপন -

সরকারি খাতের প্রকল্পগুলোর জন্য এত ব্যয়বহুল বিদেশি ঋণ “অনুমোদন” করায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, “এই বহিরাগত ঋণের সঙ্গে সম্পর্কিত বিনিময় হারের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। দেশে গত তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় ২০%। যা টাকার পরিপ্রেক্ষিতে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বোঝা আরও বাড়িয়েছে।”

আগামী মাসগুলোতেও সুদের ঝুঁকি বাড়তে পারে কারণ বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থাপনা ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মুখে সুদের হার বাড়াচ্ছে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, “বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতায় আগামী দুই বছর দেশিয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের উচিত ব্যয়বহুল ঋণে নতুন উন্নয়ন প্রকল্প না নেওয়া বা বন্ধ করে দেওয়া।”

দেবপ্রিয় বলেন, “রপ্তানি আয়ের নির্দিষ্ট স্তর এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি সত্ত্বেও, বাণিজ্য ভারসাম্য এবং চলতি হিসাবের ঘাটতি বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বহিরাগত ঋণ সেবার দায় বৃদ্ধি দেশিয় অর্থনীতির চ্যালেঞ্জকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।”

- বিজ্ঞাপন -

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ বলেন, “বৈদেশিক ঋণের প্রভাবে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে।”

তিনি বলেন, “সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিলে ভয়ানক অর্থনৈতিক মন্দা বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। বাণিজ্য ব্যবধান আরও বাড়বে, অর্থপ্রদানের ভারসাম্য এবং চলতি হিসাবও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।”

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, আগামী তিন বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা দ্বিগুণ হবে। বাংলাদেশ ২০২২ অর্থবছরে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে। এটি ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

- বিজ্ঞাপন -

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

বিষয়:
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!