মাহসা আমিনির পরিবারকে হত্যার হুমকি

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যাওয়া কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং ইরানে চলমান বিক্ষোভে অংশ না নেয়ায় পরিবারের সদস্যদের সতর্ক করা হয়েছে।

বিবিসির সঙ্গে কথা বলার সময় মাহসার চাচাতো ভাই এরফান মোরতেজাই বলেছেন, ‘আমাদের পরিবার ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রচুর চাপের মধ্যে রয়েছে। তাই আমরা ইরানের বাইরে মানবাধিকার সংস্থা বা চ্যানেলের সঙ্গে কথা বলি না এবং বাইরের বিশ্বের কাউকে তার (মাহসা আমিনি) মৃত্যু সম্পর্কে কিছু বলি না।’

তিনি জানান, তাদের পরিবারকে হুমকি দেয়া হয়েছে এবং নিরাপত্তা নিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে।

মোরতেজাই আরও বলেন, ‘কর্মকর্তারা আমাদের ভুয়া ইনস্টাগ্রামের অ্যাকাউন্ট থেকে হুমকি দিয়েছে এবং ইরানে থাকা পরিবারের সদস্যদের বলেছেন, যদি তারা বিক্ষোভে জড়িত হন, তাদের হত্যা করা হতে পারে।’

- বিজ্ঞাপন -

তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও ফোনে অনেক হুমকি পাচ্ছি। (বলেছে) আমাকে শহরে দেখলে অপহরণ করে মেরে ফেলবে।’

ইরান সরকার তুলে ধরার চেষ্টা করছে যে মাহসা ও তার পরিবার কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত। মাহসার বাবা ও চাচা এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।

মাহসার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে মোরতেজাই বলেছিলেন, ‘আমার সোজাসাপ্টা উত্তর হলো মাহসা তার ২২ বছরের জীবনে কখনও ইরানের বাইরে পা রাখেনি। সে ছিল মিষ্টি একটি মেয়ে, যার জীবন বলতে ছিল সংগীত, ভ্রমণ, শিল্প সম্পর্কে চিন্তা; মাহসা কোনো রাজনৈতিক কার্যকলাপে যুক্ত ছিল না। তার স্বপ্ন ছিল নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকা।’

কুর্দি নারী মাহসা আমিনিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের ‘নৈতিকতা পুলিশ’ গ্রেপ্তার করে। ইরানের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব করেননি।

পুলিশ হেফাজতে থাকার সময়েই মাহসা অসুস্থ হয়ে পড়েন, এরপর তিনি কোমায় চলে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়। পুলিশ মাহসাকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরিবারের অভিযোগ গ্রেপ্তারের পর তাকে পেটানো হয়।

- বিজ্ঞাপন -

মাহসার মৃত্যুর পর রাস্তায় বিক্ষোভের পাশাপাশি ফেসবুকটুইটারে #mahsaamini এবং #Mahsa_Amini হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে চলছে প্রতিবাদ।

মাহসা আমিনির মৃত্যুর সঙ্গে এক পুলিশ কর্মকর্তার হাতে বালুচ কিশোরীর ধর্ষণের ঘটনা ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশের চাবাহার শহরের পুলিশপ্রধানের হাতে ওই কিশোরী ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাতে সেখানেও চলছে প্রবল বিক্ষোভ। কেবল ওই প্রদেশেই এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৯০ জন।

ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পরই নারীদের জন্য হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয়। দেশটির ধর্মীয় শাসকদের কাছে নারীদের জন্য এটি ‘অতিক্রম-অযোগ্য সীমারেখা’। বাধ্যতামূলক এই পোশাকবিধি মুসলিম নারীসহ ইরানের সব জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মের নারীদের জন্য প্রযোজ্য।

- বিজ্ঞাপন -

হিজাব আইন আরও কঠোরভাবে প্রয়োগের জন্য চলতি বছরের ৫ জুলাই ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি একটি আদেশ জারি করেন। এর মাধ্যমে ‘সঠিক নিয়মে’ পোশাকবিধি অনুসরণ না করা নারীদের সরকারি সব অফিস, ব্যাংক এবং গণপরিবহনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় গত জুলাইয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #no2hijab হ্যাশট্যাগ দিয়ে শুরু হয় প্রতিবাদ। দেশটির নারী অধিকারকর্মীরা ১২ জুলাই সরকারঘোষিত জাতীয় হিজাব ও সতিত্ব দিবসে প্রকাশ্যে তাদের বোরকা ও হিজাব সরানোর ভিডিও পোস্ট করেন।

এদিকে চলমান আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন তেল শ্রমিকরা।

তেল কোম্পানিতে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের সংগঠন সোমবার বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলাম, আমাদের সচেতন এবং সাহসী কর্মীরা জনগণের ওপর দমনপীড়ন ও হত্যার মুখে নীরব ও নিষ্ক্রিয় থাকবেন না। তারা জনগণের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন।

‘এটি শুরু হয়ে গেছে। আমরা সারা দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!