নেপালের পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে বন্যা এবং ভূমিধসে কমপক্ষে ৩৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে শত শত বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত এবং বন্যার পানির তোড়ে অনেক সেতু ও রাস্তাঘাট ভেসে গেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে নেপালের পশ্চিমের বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ বন্যা এবং ভূমিধস দেখা দিয়েছে। দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, নেপালের উত্তর-পশ্চিমের কর্নালি প্রদেশে ভারী মৌসুমী বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় ওই এলাকায় আটকে পড়া হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তুষারধস ও বন্যায় শত শত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্নালি প্রদেশে বন্যায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২২ জন নিখোঁজ রয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
টানা প্রবল বর্ষণের কারণে পার্বত্য এই অঞ্চলে উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন। দেশটির পুলিশের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে অন্নপূর্ণা পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমরা মাঠপর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের মোতায়েন করেছি। সুরখেত থেকে লোকজনকে উদ্ধারের জন্য আমরা একটি উড়োজাহাজের ব্যবস্থাও করেছি।
‘তবে দুর্ভাগ্যবশত আবহাওয়ার উন্নতি না ঘটায় আশানুরূপ অগ্রগতি হচ্ছে না।’
বন্যা-ভূমিধসে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিখোঁজের খবর এসেছে দেশটির নিম্নাঞ্চলের কালিকট জেলা থেকে। ভারী বর্ষণের সতর্কতার পর এই জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষকে গত সপ্তাহে তাদের বাড়িঘর থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
নেপালের জরুরি সার্ভিস কর্তৃপক্ষ বলেছে, কর্নালি প্রদেশের কিছু এলাকায় কর্নালি নদীর পানি (১২ মিটার) ৩৯ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বন্যার পানির তোড়ে কর্নালি নদীর ওপর নির্মিত বেশ কয়েকটি ঝুলন্ত সেতুও ভেসে গেছে।
দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ওই অঞ্চলে উড়োজাহাজে করে ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়ে দিয়েছে। এদিকে, জাতিসংঘের একাধিক দাতব্য সংস্থা বলেছে, পশ্চিম নেপালের যেসব এলাকা বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব এলাকায় খাবার ও ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে।
নেপাল বর্ষা মৌসুমের শেষের দিকে রয়েছে। দেশটিতে সাধারণত বছরের জুনের দিকে মৌসুমের শুরু এবং শেষ হয় অক্টোবরে। নেপালের ন্যাশনাল এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে চলতি বছরে বৃষ্টি-সম্পর্কিত দুর্যোগে কমপক্ষে ১১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
সূত্র: বিবিসি।