গত কয়েক মাস ধরে মন্দাভাব চলছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে। বাজার চাঙ্গা করতে সম্প্রতি তেলের উত্তোলন কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে জ্বালানি তেল উত্তোলন ও বিপণনকারী দেশসমূহের জোট ওপেক প্লাস; কিন্তু তা সত্ত্বেও বাজারের মন্দাভাব কাটছে না।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক বাজারে ফের কমেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দিন প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ১ দশমিক ৬১ ডলার কমে হয়েছে ৯২ দশমিক ৯৭ ডলার এবং প্রতি ব্যারেল ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড তেলের দাম ১ দশমিক ৮৮ ডলার কমে হয়েছে ৮৭ দশমিক ৩৭ ডলার।
শতকরা হিসেবে এই দিন ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে কমেছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম কমেছে ২ দশমিক ১ শতাংশ।
জ্বালানি তেলের বাজার পর্যবেক্ষণকারী ব্রোকারেজ সংস্থা ওয়ান্ডার কর্মকর্তা ক্রেইগ এরলাম বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘টানা লোকসানের কারণে দিন দিন হতাশা বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের বাজারে।’
চলতি বছরের শুরুর দিকে রুশ বাহিনী যে সময় ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করল, সে সময় ব্যাপক চাঙ্গা হয়ে উঠেছিল জ্বালানি তেলের বাজার। প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের দাম তখন উঠেছিল ১৪৭ ডলার, ইতিহাসে এর আগে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এত বাড়েনি।
কিন্তু তারপর গত জুন মাস থেকে পড়তে থাকে তেলের দাম। একই সময়ে ডলারের মানও বাড়তে থাকে, এবং আন্তর্জাতিক তেলের বাজার প্রায় সম্পূর্ণ ডলার নির্ভর হওয়ায় বিদেশি মুদ্রার মজুত রক্ষার্থে তেল কেনার পরিমাণ কমিয়ে দেয় উন্নয়নশীল বিশ্বের বহু দেশ।
তবে এই অবস্থা আরও দীর্ঘস্থায়ী হলে অচিরেই বিশ্বজুড়ে মন্দা শুরু হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জ্বালানি তেলের বাজার বিশেষজ্ঞরা।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার বিশ্লেষণকারী সংস্থা আভাট্রেডের বিশ্লেষক নাঈম আসলাম রয়টার্সকে বলেন, ‘বিভিন্ন দেশ যদি তেল কম কেনে, স্বাভাবিকভাবে উৎপাদনও কম হবে এবং তার প্রভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার হবে নিম্নগামী। আর প্রবৃদ্ধির হার যদি নিম্নগামী হয়, সেক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা ঠেকানোর কোনো উপায় নেই।’