আমদানির চেয়ে রপ্তানি আয় কম হওয়ায় অর্থবছরের শুরু থেকে বড় অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। একই সময়ে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের ঘাটতিও ১.৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
রোববার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) এক হাজার ২৬৯ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এর বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৮১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য। এতে ৪৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৪ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ৪৭ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি, বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী ও আশানুরূপ রেমিট্যান্স প্রবাহ না থাকায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ছে বাংলাদেশ।
আলোচিত সময়ে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়েছে। আগস্ট মাস শেষে সেবা খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ১৫১ কোটি ডলার। অন্যদিকে সেবা খাতে দেশের ব্যয় হয়েছে ২১৯ কোটি ডলার। এ খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৪৫ কোটি ডলার।
চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসেবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু দেশে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স এখন ঋণাত্মক হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের আগস্ট শেষে এই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫০ কোটি ২০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে এ ঘাটতি ছিল ১৪১ কোটি ২০ লাখ ডলার।
সামগ্রিক লেনদেনেও (ওভারঅল ব্যালান্স) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। আগস্ট শেষে সামগ্রিক লেনেদেনের (ঋণাত্মক) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এই সূচকটি আগের বছরের একই সময়ে ২২ কোটি ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ৪২২ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আগের বছর পাঠিয়েছিলেন ৩৬৮ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ।