প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতে সিরিজ জয়ের পথটা করে রেখেছিল বাংলাদেশ। লাল-সবুজ জার্সিধারীরা সেটির আনুষ্ঠানিকতা সারলো সহজ জয়ে। মঙ্গলবার দুবাইয়ের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৩২ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তাতে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০তে জিতে নিয়েছে নুরুল হাসান সোহানরা।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে করে ১৬৯ রান। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে আরব আমিরাত ৫ উইকেটে করতে পেরেছে ১৩৭ রান।
উইকেট পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়নি বাংলাদেশের। সফরকারীদের প্রথম উইকেট এনে দেন নাসুম আহমেদ। আগের ম্যাচে ৪ ওভার বল করে কোনও উইকেট না পাওয়ায় দ্বিতীয় ম্যাচে চোখ রেখেছিলেন বাঁহাতি স্পিনার। খুব বেশি অপেক্ষায় থাকতে হয়নি তাকেও। বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দিয়েছেন তিনিই। উইকেট পেতে কারও সাহায্য নেননি নাসুম, নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়েছেন তিনি। চিরাগ সুরিকে আউট করে এই স্পিনার এনে দেন প্রথম উইকেট। সুরি ১০ বলে করেন ৫ রান।
অন্যদিকে এই ম্যাচ দিয়ে ফেরা তাসকিন আহমেদও দ্রুতই পেয়েছেন উইকেটের স্বাদ। প্রথম টি-টোয়েন্টিকে একাদশে ছিলেন না এই পেসার। আজ সুযোগ পেয়ে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। আরেক ওপেনার মোহাম্মদ ওয়াসিমকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তাসকিন। যাওয়ার আগে স্বাগতিক ওপেনার ১৬ বলে ২ ছক্কায় করেন ১৮ রান।
এমনিতেই অবস্থা ভালো ছিল না সংযুক্ত আরব আমিরাতের। তাদের ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। এর ওপর আবার চড়াও হলেন মোসাদ্দেক হোসেন। এই স্পিনার পরপর ২ বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও হয়নি, তবে আরব আমিরাতকে ঠিকই চেপে ধরেন।
বল হাতে নিয়েই সাফল্য পেয়েছেন মোসাদ্দেক। নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে আরিয়ান লাকরাকে ক্যাচ বানান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের হাতে। ফেরার আগে স্বাগতিক ব্যাটার ৯ বলে করেন ৪ রান।
আরব আমিরাত ওই ধাক্কা কাটিয়ে উঠবে কী, পরের বলেই আবার উইকেট মোসাদ্দেকের। তার লাইনে থাকা বল স্টাম্প ছেড়ে খেলতে গিয়েছিলেন ভ্রিতাইয়া অরাবিন্দ। বল ব্যাটে কানেক্ট করতে না পারায় সরাসরি স্টাম্পে আঘাত হানে। মাত্র ২ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরে যান এই ব্যাটার। পরের বলে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা থাকলেও সেটির স্বাদ পাওয়া হয়নি মোসাদ্দেকের।
২৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় সংযুক্ত আরব আমিরাত। ওই জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়েন সিপি রিজওয়ান ও বাসিল হামিদ। এই জুটিতে স্কোর ১০০ পার করে আরব আমিরাত। তাদের দৃঢ়তায় ১০ ওভার পেরিয়ে গেলেও উইকেটের স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ! অবশেষে এই জুটি ভেঙে উইকেট এনে দেন এবাদত হোসেন।
মোসাদ্দেকের জোড়া আঘাতে ২৯ রানের ৪ উইকেট হারায় আরব আমিরাত। চলছিল তখন সপ্তম ওভারের খেলা। এরপর রিজওয়ান ও হামিদের চমৎকার ব্যাটিংয়ে চাপ কাটিয়ে রান বাড়িয়ে নেয় স্বাগতিকরা। এই দুই ব্যাটারের প্রতিরোধে আর উইকেট উৎসব করা হয়নি বাংলাদেশের। অবশেষে হামিদকে আউট করে উইকেট এনে দিয়েছেন এবাদত। আফিফ হোসেনর হাতে ক্যাচ বানিয়ে এই পেসার ফেরান হামিদকে। ফেরার আগে ৪০ বলে ৪ বাউন্ডারিতে করেন ৪২ রান।
তবে অধিনায়ক রিজওয়ানকে আউট করতে পারেনি বাংলাদেশ। এই ব্যাটার খেলেন দলীয় সর্বোচ্চ হার না মানা ৫১ রানের ইনিংস। ৩৬ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ২ চার ও ২ ছক্কায়। তার সঙ্গে ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন জাওয়ার ফরিদ।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার মোসাদ্দেক। ডানহাতি স্পিনার ২ ওভারে ৮ রানে নেন ২ উইকেট। আর একটি করে উইকেট শিকার তাসকিন, নাসুম ও এবাদতের।
ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন ব্যাট হাতে ৪৬ রানের ইনিংস খেলা মেহেদী হাসান মিরাজ।