ইরানে বিক্ষোভ: ৮ দিনে নিহত অর্ধশতাধিক

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ও হেফাজতে নেওয়ার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ গড়িয়েছে অষ্টম দিনে।

এই ৮ দিনের প্রতিদিনই দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। সরকারি হিসেবে বলা হয়েছে—দু’পক্ষের সংঘাতে এ পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসেবের তিনগুণ; অর্থাৎ ৫১ জনেরও বেশি বলে দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।

মাথায় হিজাব না থাকায় গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গেপ্তার হন মাশা আমিনি নামের ২২ বছরের এক তরুণী। গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।

পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চারদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় মাশার। সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী, হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়াই তার মৃত্যুর কারণ; তবে বিক্ষোভকারী, মাশার পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ— হেফাজতে মাথায় গুরুতর আঘাত করার পরই জীবনসংকটে পড়েন তিনি এবং ‍ওই আঘাতের জেরেই তার মৃত্যু হয়।

- বিজ্ঞাপন -

ইরানের স্থানীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী পড়াশোনা সূত্রে ইরানের কুর্দিস্তান প্রদেশে থাকতেন মাশা, গত সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে তেহরান এসেছিলেন।

তার মৃত্যুর খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল কুর্দিস্তানে। পরে দ্রুততার সঙ্গে অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে সেই বিক্ষোভ। আইএইচআরের তথ্য অনুযায়ী, ইসফাহান, মাশহাদ, শিরাজ, তাবরিজসহ ইরানের অন্তত ৮০টি শহরে বর্তমানে বিক্ষোভ চলছে। আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি— মাশা আমিনির মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নারীদের কঠোর পোষাকনীতি ও নৈতিক পুলিশ বাতিল করা।

বিক্ষোভের তেজ কমাতে ইতোমধ্যে দেশে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দিয়েছে ইরানের সরকার, দেশটির সামরিক বাহনী মাঠে নামার হুমকি দিয়েছে এবং ইতোমধ্যে সরকারপন্থীরা হিজাবের পক্ষে আন্দোলন শুরু করেছেন। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে তাদের আন্দোলন।

কিন্তু সরকারের এসব পদক্ষেপ তেমন কাজে আসছে না। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—শুক্রবার সারাদিন রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরের সড়ক দখল করে আন্দোলন করেছেন সরকারপন্থীরা, সন্ধ্যার পর তারা সরে গেলে ফের সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন সরকারবিরোধীরা।

ইতোমধ্যে তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে একাধিক পুলিশস্টেশন ও সরকারি স্থাপনা বিক্ষোভকারীরা জ্বালিয়ে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা গেছে, শুক্রবার ইরানের বাবল শহরে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ছবি সম্বলিত একটি বিশাল বিলবোর্ড পুড়িয়ে দিয়েছেন সরকারবিরোধীরা।

- বিজ্ঞাপন -

এছাড়া রাজধানী তেহরানে ইরানের আধাসামরিক বাহিনী বাসিজ মিলিশিয়ার একটি ঘাঁটি পুড়িয়ে দেওয়ার চিত্রও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর আঘাতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের রক্তাক্ত হওয়ার কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ফুটেজও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ইরানের সরকার অবশ্য বিক্ষোভ দমনে বেশ কঠোর মনোভাব নিয়েই এগোচ্ছে। শুক্রবার নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই আন্দোলন ও ধংসাত্মক কার্যক্রমের পার্থক্য বুঝতে হবে। আন্দোলনের নামে ধংসাত্মক কর্মকাণ্ড আমরা সহ্য করব না।’

- বিজ্ঞাপন -

সূত্র : এএফপি

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!