সর্বকালের সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় পৌঁছেছে ভারতীয় রুপি। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ডলার প্রতি ভারতীয় মুদ্রার দাম ৮১ রুপি ছাড়িয়ে গেছে। গত ২০ বছরের মধ্যে ডলারের মূল্য সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছানো এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়ানোর পরই এই অস্থিরতার সৃষ্টি হয়।
আর এরপরই ভারতীয় মুদ্রা দুর্বল হয়ে শুক্রবার সকালে প্রথমবারের মতো ৮১ রুপি ছাড়িয়ে যায়। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই’র বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির রেকর্ড পতন হয় এবং এদিনই নিজের সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় ছিল ভারতীয় এই মুদ্রা। এরপর শুক্রবার সকালে লেনদেন শুরু হলে ডলারের বিপরীতে রুপির দাম আরও ৩৯ পয়সা কমে যায় এবং ডলার প্রতি রুপির মূল্য দাঁড়ায় ৮১.১৮-তে। যা ভারতীয় এই মুদ্রার ইতিহাসে সর্বকালের সর্বনিম্ন।
ডিলারদের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) সক্রিয় হস্তক্ষেপের অভাব এবং সুদের হারের বিষয়ে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের অত্যন্ত তীক্ষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেন সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার ভারতীয় মুদ্রা একক সেশন তার সবচেয়ে বড় পতনের সম্মুখীন হয়েছে।
এনডিটিভি বলছে, বৃহস্পতিবার লেনদেনের শেষ কয়েক ঘণ্টায় ডলারের বিপরীতে রুপির পতন ত্বরান্বিত হয় এবং ইতিহাসে নিজের সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় কার্যক্রম শেষ করে। তবে শুক্রবার লেনদেন শুরুর পর সেই পতন অব্যাহত রয়েছে।
অবশ্য শুক্রবার মুদ্রা বাজার খোলার আগে মুম্বাই-ভিত্তিক একটি ব্যাংকের একজন ডিলার রয়টার্সকে বলেন, ‘শুধুমাত্র গতকালের (পতনের) গতির ওপর ভিত্তি করে এই জুটি (ডলার/রুপি) লেনদেন শুরুর পরপরই ৮১-তে পৌঁছাবে।’
তবে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার পতনের কারণ কী? প্রাথমিকভাবে দেশটির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডলারের দাম বৃদ্ধি, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত, আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিতিশীল আর্থিক অবস্থা, অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতির কারণে ভারতীয় রুপির মানের রেকর্ড পতন হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, রুপির পতনে ধাক্কা খেয়েছে বিনিয়োগকারীদের আস্থা। এতো চড়া সুদ যে যুক্তরাষ্ট্রকে মন্দায় ঠেলে দিতে পারে, সেই ইঙ্গিত ফেডারেল রিজার্ভই দিয়েছে। তবুও তাদের বার্তা, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সুদ আরও বাড়তে পারে। ফলে ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে ডলারকে আঁকড়ে ধরছেন বহু বিনিয়োগকারী।