আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষা ও অধিকার রক্ষায় বিশ্বনেতাদের কাছে অনুরোধ করেছেন আফগান গার্লস রোবোটিক্স দলের সাবেক অধিনায়ক সোমায়া ফারুকি। জাতিসংঘে বক্তব্যের সময় এ কথা বলেন তিনি। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন এই আফগান তরুণী।
২০ বছর বয়সী সোমায়া ফারুকি রয়টার্সকে বলেন, গত বছর আমি শ্রেণিকক্ষে ছিলাম। কিন্তু এখন আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারি না। ক্লাসরুমগুলো ফাঁকা থাকে। ফলে এই অবস্থায় মানিয়ে নিতে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আমার অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন ছিল।
সোমায়া ফারুকি মিসৌরি ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে পড়ছেন। ২০ বছর যুদ্ধের পরে গত বছরের আগস্টে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ইসলামপন্থী তালেবানরা ক্ষমতা দখল করলে নিজের দেশ ত্যাগ করেন এই তরুণী।
চলতি সপ্তাহে সাধারণ পরিষদে জাতিসংঘের উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের জন্য বিশ্ব নেতারা যখন একত্র হয়েছেন। ওই সময় নিউইয়র্কে জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সোমায়া ফারুকি বলেন, নারীদের স্কুল পুনরায় চালু করা ও তাদের অধিকার রক্ষায় সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা সবাই এখানে শিক্ষাকে রূপান্তরিত করার জন্য সমাধানের প্রস্তাব দিতে এসেছেন। কিন্তু যারা পিছিয়ে পড়া রয়েছে, তাদের ভুলে যাবেন না। অনেকেই স্কুলে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না।
এদিকে আফগান নারীদের রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ায় নেতাদের তিরস্কার করেন ২০১২ সালে পাকিস্তানে তালেবান বন্দুকধারীর গুলিতে আহত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই।
তিনি বলেন, আপনাদের মধ্যে বেশিরভাগই জানেন ঠিক কী করা দরকার। এজন্যে স্বল্পমেয়াদী প্রতিশ্রুতি দেবেন না। শিক্ষা সম্পূর্ণ করার অধিকারকে সমুন্নত রাখতে ও তহবিলের ব্যবধান ঠিক রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবেন।
গত বছর তালেবানের ক্ষমতা দখলের পরে আফগান নারীদের অধিকার রক্ষায় আপস না করার জন্য বিশ্বকে অনুরোধ করেছিলেন মালালা ইউসুফজাই।