বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলায় সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার দুই ঘণ্টা পর কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন এক স্কুলছাত্রী। এই অদম্য মানসিকতার জন্য তিনি ভাসছেন প্রশংসার বন্যায়। এদিকে, স্কুলছাত্রীর সন্তান প্রসবের পর বাল্যবিয়ের বিষয়টি সামনে আসায় কিছুটা বিব্রত তার অভিভাবকরা।
ওই স্কুলছাত্রীর নাম মেঘলা খাতুন। তিনি কুষ্টিয়ার আলাউদ্দিন আহামেদ ক্যাডেট স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তার পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল কুষ্টিয়া হাইস্কুল। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের পূর্ব মিলপাড়ার নগর মাতৃসদন হাসপাতালে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন মেঘলা।
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার দুই ঘণ্টার মাথায় তিনি বসেন পরীক্ষার হলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৫ মার্চ মেঘলার বিয়ে হয়। তার স্বামী আলআমিন একটি কারখানার কর্মী। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আগের পরীক্ষাগুলো ঠিকঠাকই দিয়ে আসছিলেন।
মঙ্গলবার ভোরে তীব্র প্রসব বেদনা নিয়ে তিনি নগর মাতৃসদন হাসপাতালে ভর্তি হন।
সকাল সাড়ে ৮টার সময় ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিছুক্ষণ পর মেঘলা শারীরিকভাবে সুস্থ বোধ করায় যেতে চান এসএসসির হলে।
সাড়ে ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যথাসময়ে পরীক্ষায় অংশ নেন মেঘলা।
মেঘলা খাতুন বলেন, “আমি শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলাম। তবে এখানকার চিকিৎসক ও স্টাফরা আমাকে মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছেন। এখানকার সেবার মান অনেক উন্নত তাই আমি আমার নবজাতক সন্তানের চিন্তা মাথা থেকে সরিয়ে রেখে পরীক্ষা দিতে গিয়েছি।”
এ বিষয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সুমাইয়া সারমিন বন্যা ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “সন্তান জন্মদানের পর আমরা প্রসূতি মেঘলা খাতুনের শারীরিক পরীক্ষা করি। ঝুঁকিমুক্ত থাকায় তাকে হলে পাঠাতে সম্মত হই।”
হাসপাতালের প্রজেক্ট ম্যানেজার রাহেলা পারভিন বলেন, “আমি এবং আমাদের সব স্টাফ আজকে খুবই আনন্দিত। একজন পরীক্ষার্থী আমাদের এখানে সুস্থভাবে সন্তানের জন্ম দিয়ে হলে যেতে পেরেছেন। আমরা এখানে আমাদের প্রতিটি প্রসূতি মাকে নিবিড় সেবা দিয়ে থাকি।”