রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত বিশ্বব্যাপী দীর্ঘমেয়াদী খাদ্যশস্যের দাম ৭% বৃদ্ধি করতে পারে বলে এক সমীক্ষা গবেষণায় উঠে এসেছে।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এই সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও উরুগুয়ের গবেষকরা চলমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এই সমীক্ষা গবেষণা প্রস্তুত করেছেন।
প্রতিবেদনে আগামী এক বছরের মধ্যে গম ও ভুট্টার দামের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে সেটি দেখানো হয়েছে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বব্যাপী গমের চাহিদার প্রায় এক চতুর্থাংশ পূরণ করে। রাশিয়ার কৃষ্ণ সাগরের বন্দর অবরোধ এবং মস্কোর ওপর বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞা এখন গম ও ভুট্টার সরবরাহ সেই পরিমাণ দিতে পারবে না। ফলে বৈশ্বিক খাদ্য মন্দা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।
মডেল সমীক্ষায় বলা হয়েছে, যদি রাশিয়ান শস্য রপ্তানি অর্ধেক হয় এবং ইউক্রেনের রপ্তানি একই সময়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায় তাহলে ভুট্টায় ৪.৬% এবং গমে ৭.২% দাম বৃদ্ধি পাবে।
এই সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে অন্যান্য প্রধান উৎপাদক দেশগুলোকে তাদের শস্য উৎপাদন ক্রমবর্ধমানহারে বাড়াতে হবে। ইউক্রেন থেকে সমস্ত শস্য রপ্তানি বন্ধ হলে, অস্ট্রেলিয়াকে গমের এলাকা বাড়াতে হবে ১%, চীনকে ১.৫%, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ১.৯% এবং ভারতকে ১.২% বৃদ্ধি করতে হবে।
এর আগে এ বছরের জুলাইয়ে জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করেছিলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত এবং করোনাভাইরাস মহামারি দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য প্রভাব ফেলবে। তার সঙ্গে যুক্ত হবে “বৈশ্বিক ক্ষুধা সংকট”।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, খাদ্যের দাম বর্তমানে এক বছর আগের তুলনায় ১০% বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানাপলিসের ওনিল স্কুল অফ পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাফেয়ার্সের গবেষক জেরোম ডুমর্টিয়ার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “অন্যান্য শস্য উৎপাদনকারীরা বিশ্বব্যাপী চাহিদা মেটাতে সক্ষম কিনা তা বর্তমানে পরিষ্কার নয়। ফলে দাম বাড়ার যে পূর্বাভাস সেটিকেও অতিক্রম করে যেতে পারে। দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ এবং চীনে খরা পরিস্থিতিসহ অনেক দেশের ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এই শঙ্কাকে বাড়িয়ে তুলছে।”