ইরানে হিজাব না পরার অভিযোগে আটকের পর পুলিশি হেফাজতে এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বিক্ষোভস্থল থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনী রবিবার উত্তর-পশ্চিম কুর্দিস্তান প্রদেশের সানন্দাজে প্রায় ৫০০ বিক্ষোভকারীর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
স্থানীয় ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, কুর্দিস্তানের রাজধানী সানন্দাজে প্রায় ৫০০ বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিল। তারা দেশটির নেতাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা কিছু গাড়ির জানালা ভাঙচুর করেছে। এ সময় পুলিশ জমায়েত ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ইরানে জনপরিসরে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরাসহ কঠোর পর্দাবিধি রয়েছে। এই বিধিগুলো কার্যকর হচ্ছে কি-না, তা তদারকি করে দেশটির নৈতিকতা–বিষয়ক পুলিশ। এই বিধির আওতায় নৈতিকতা-বিষয়ক পুলিশ দল গত মঙ্গলবার মাহসা আমিনিকে (২২) তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরান সফরে যাচ্ছিলেন।
আটকের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, পুলিশ ভ্যানে তোলার পর আমিনিকে মারধর করা হয়। তবে ইরানি পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নারীদের পোশাক নিয়ে ইরানের কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট এব্রাহিম রাইসির কড়াকড়ি আরোপের ঘোষণার কয়েক সপ্তাহের মাথায়ই এ ঘটনা ঘটলো। উল্লেখ্য, ইসলামি বিপ্লবের পর ১৯৭৯ সাল থেকে ইরানে নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরতে হয়।
সোমবার দেশটির একজন পুলিশ কর্মকর্তা জেনারেল হোসেন রহিমি বলেছেন, “যে তরুণীর মৃত্যু হয়েছে তিনি পোশাকবিধি লঙ্ঘন করেছিলেন। আমাদের পুলিশ তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে ‘শালীন পোশাক’ আনতে বলেছিল।”
ভুক্তভোগীর বাবা আমজাদ আমিনি সোমবার ফার্সকে বলেছেন, “পুলিশ যা বলছে তা আমি বিশ্বাস করি না। এছাড়া আমার মেয়েকে দেরিতে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। আমার মেয়ে স্বাভাবিক সুস্থ ছিল। তার কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল না।”