বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে কোলে সন্তান নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে কেন্দ্রে এলো যমজ বোন। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সারিয়াকান্দি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয় তারা।
যমজ দুই বোনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় করোনার সংক্রমণ রোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, পরিবারের আর্থিক অবস্থা মন্দা হওয়ায় বাবা-মা তাদের বাল্যবিবাহ বিয়ে দেন। পরে দুই বোনের কোলজুড়ে ছেলে ও মেয়েসন্তান আসে। এবার দুই বোন একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
সারিয়াকান্দি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরিদর্শক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষার প্রথমদিনে দুই মাস বয়সী শিশুসন্তান কোলে নিয়ে কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসে যমজ দুই বোন। পরে দুই শিশুকে নানি ও খালার কাছে রেখে কেন্দ্রে প্রবেশ করে। পরীক্ষা শেষে দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে দুই বোন। পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে অংশ নেবে তারা।
দুই পরীক্ষার্থীর মা জানিয়েছেন, সারিয়াকান্দি উপজেলার এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর যমজ সন্তান তারা। স্থানীয় নিজাম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দুজনে। করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই বোন বাড়িতে ছিল। করোনায় বাবার ব্যবসায় লোকসান হয়। পরিবারে নেমে আসে অসচ্ছলতা। তখন মেয়েদের বিয়ের প্রস্তাব আসে। একপ্রকার বাধ্য হয়ে বাবা-মা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুই তরুণের সঙ্গে দুই বোনকে বিয়ে দেন। বিয়ের বছরখানেক পর দুই বোনের সন্তান হয়। পরে শ্বশুরবাড়ির ইচ্ছায় দুই বোন এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করে। বৃহস্পতিবার প্রথমদিনে দুই বোন সন্তান নিয়ে কেন্দ্রে আসে।
কেন্দ্র থেকে বের হয়ে দুই বোন জানায়, করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় ও বাবার ব্যবসা মন্দা হওয়ায় তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির ইচ্ছায় এসএসসি পরীক্ষা অংশ নেয় তারা। প্রথমদিনের পরীক্ষা ভালো হয়েছে তাদের।
করোনাকালে সারিয়াকান্দি উপজেলায় কত শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হযরত আলী বলেন, ‘অফিসের খাতায় সঠিক তথ্য লেখা আছে। তা পরবর্তী সময়ে দেখে জানাতে পারবো। এই মুহূর্তে আমার কাছে সঠিক তথ্য নেই।’