জাপানি তরুণ-তরুণীরা বিয়েতে আগ্রহ হারাচ্ছে বলে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে। এ কারণে দেশটি জনসংখ্যা হ্রাস জনিত সমস্যায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ান।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে পরিচালিত জরিপটি চলতি মাসে প্রকাশিত হয়েছে। এই জরিপে জন্মহার কমে যাওয়ার যে চিত্র পাওয়া গেছে তা উদ্বেগজনক।
এতে বলা হয়, ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ এবং ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণী জানিয়েছেন, জীবনে তাদের বিয়ের ইচ্ছা নেই। ১৯৮২ সালের পর বিয়ের প্রতি অনাগ্রহের এই হার সর্বোচ্চ।
এর আগেও ১৯৮০ দশকে এক সমীক্ষায় জাপানের ২.৩% পুরুষ ও ৪.১% নারী বলেছিলেন তারা কখনই বিয়ে করবেন না।
বিয়ে কমে যাওয়া জাপানের জন্মহারের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে দেশটির জনসংখ্যা এবং কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী হ্রাস পাবে।
বিশেষজ্ঞরা এই প্রবণতার জন্য বেশ কয়েকটি কারণকে দায়ী করেছেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অল্পবয়সী কর্মজীবী নারীদের মধ্যে অবিবাহিত থেকে ক্যারিয়ারে পাওয়া স্বাধীনতাগুলো উপভোগ করার ক্রমবর্ধমান আকাঙ্ক্ষা।
জাপানি পুরুষরা জানিয়েছেন, অবিবাহিত থাকাকে তারা উপভোগ করে। তবে চাকরির নিরাপত্তা এবং পরিবারের জন্য তাদের আর্থিক তাদের সামর্থ্য নিয়ে উগ্বিগ্ন।
বিশেষজ্ঞরা জনসংখ্যা হ্রাসজনিত এই সমস্যা এড়াতে নারীদের সন্তান ধারণের পর কাজে ফিরে আসা সহজ করা এবং জাপানের ভয়াবহ দীর্ঘ কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন।
সেন্ট্রাল জাপানের চুকিও ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক শিগেকি মাতসুদা বলেন, বিবাহের প্রবণতা কমায় জন্মহারে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
মাইনিচি শিম্বুন পত্রিকাকে বলেন, “যারা বিয়ে করতে চায় বা সন্তান নিতে চায় তাদের আকাঙ্খা পূরণ করতে জাপান সরকার জন্মহার বাড়ানোর জন্য কাজ করছে।”
জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২১ সালে গত বছরের তুলনায় ৩.৫% কম শিশু জন্ম নিয়েছে। এছাড়া বিয়ের সংখ্যাও কমে গেছে। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সর্বনিম্ন সংখ্যা।