আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই সংঘাতে তাদের কমপক্ষে ৪৯ সেনা নিহত হয়েছে। আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে বেশ কিছু শহরে কামান দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
আর্মেনিয়া বলছে, মঙ্গলবার সকালে জেরমুক, গোরিস, কাপানসহ বেশ কিছু শহরে হামলা চালানো হয়েছে। আজারবাইজানের এই হামলাকে ‘বড় ধরনের উস্কানি’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এর পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছে আর্মেনিয়া।
এদিকে আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ বলছে, আর্মেনিয়া আগে হামলা চালিয়েছে। অপরদিকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বিভিন্ন শহরে আক্রমণ করার জন্য আজারবাইজানকেই দায়ী করেছেন। তার দাবি, তারা নাগারনো-কারাবাখের বিষয়ে একমত হয়নি বলেই এই হামলা চালানো হয়েছে।
পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে পাশিনিয়ান বলেন, দুদেশের মধ্যে শত্রুতাপূর্ণ আচরণের তীব্রতা কিছুটা হ্রাস পেলেও আজারবাইজান থেকে হামলার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।
কিছুদিন আগেও নাগারনো-কারাবাখ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। সে সময় সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত তিনজন নিহত হয়। আহত হয় আরও
বেশ কয়েকজন। উভয়পক্ষই একে ওপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে।
আজারবাইজান তখন অভিযোগ তোলে যে, আর্মেনিয়ার মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতবাদী কারাবাখ যোদ্ধারা ওই অঞ্চলে আজারি সেনাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। তারপরেই আজারবাইজান বাধ্য হয়ে ওই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চালায়।
বিপরীতে আর্মেনিয়ার অভিযোগ ছিল, বিতর্কিত এলাকায় আজারবাইজানই প্রথম অভিযান চালিয়েছে। রুশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর টহলদারী এলাকায় আজারবাইজানের সেনারা ঢুকে পড়লে তাদের বাধা দেওয়া হয়।
নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের মধ্যে অবস্থিত হলেও ১৯৯৪ সালে যুদ্ধের পর থেকে সেটি জাতিগত আর্মেনীয়দের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২০২০ সালের যুদ্ধে অঞ্চলটি ফের দখলে নেয় আজারি সৈন্যরা। ছয় সপ্তাহের ওই যুদ্ধে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক নাগোরনো-কারাবাখে রাশিয়ার দুই হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে।