রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এক শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহার বিরুদ্ধে। আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) ও ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের মধ্যে সংঘর্ষের সময় এ ঘটনা ঘটে।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা শহীদ হবিবুর রহমান হল মাঠে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃবিভাগ টুর্নামেন্টের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) ও ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের মধ্যে ম্যাচ শুরু হয়। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে কোনও দল গোল করতে পারেনি। ফলে টাইব্রেকার শুরু হয় এবং প্রথম দুটি করে শটে উভয় পক্ষই গোল করে।
তবে রেফারির বাঁশি বাজানোর আগেই তৃতীয় শটটি নেন ভেটেরিনারি বিভাগের খেলোয়াড় রিয়াদ। সেই শট ফিরিয়ে দেন আইবিএর গোলরক্ষক। তবে বাঁশি বাজানোর আগেই কিক দেওয়ায় রেফারি ওই শটটি বাতিল ঘোষণা করেন। এতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগে অধ্যাপক মোইজুর রহমানকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ছাড়া আইবিএর প্রভাষক আনাম শাহরিয়ার রাব্বীর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, অধ্যাপক মোইজুর রহমানের টি-শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া করছেন ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও আইবিএ ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সিনহা। তাকে পেছন থেকে টেনে শিক্ষককে রক্ষার চেষ্টা করছেন ভেটেরিনারি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু নাইম তন্ময়। এ সময় লাঠি হাতে তেড়ে আসতে দেখা যায় আইবিএ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈকত রায়হানকে।
এ বিষয়ে ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোইজুর রহমান বলেন, ‘ওই সময় আইবিএর কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার জার্সির কলার ধরে টানাহেঁচড়া করে। এতে আমার জার্সিটি ছিঁড়ে যায়। পরে আমি এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ বিভাগের সভাপতির মাধ্যমে মাননীয় উপাচার্য বরাবর জমা দিয়েছি।’
শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষার্থী আবু নাঈম তন্ময় বলেন, ‘আমাদের স্যারকে যখন লাঞ্ছিত করা হয়, তখন তিনি আইবিএর কয়েকজন শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানালেও তারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। পরে আইবিএর শিক্ষার্থীরা আমাদের কয়েকজনকে বেধম মারধর করে।’
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আবু সিনহা বলেন, ‘ওই শিক্ষকই প্রথমে আমাদের খেলোয়াড়দের মারধরের নির্দেশ দেন তার বিভাগের শিক্ষার্থীদের। এতে দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সেই সংঘর্ষের ভিতর শিক্ষক ছিল কিনা না আমি বুঝতে পারি নাই। তবে যখন তিনি পরিচয় দেন, তখন আমরা সেখান থেকে আমরা চলে আসি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘এ ঘটনায় ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জহুরুল আনিসকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’