গতকাল ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২২ “বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস” উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি ও আঁচল ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্যোগে ছাত্রছাত্রীদেও মাঝে আত্মহত্যার মাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং কিভাবে তাদের এই প্রবণতা থেকে রক্ষা করা যায় এই বিষয়ে একটি অনলাইন সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক (অবঃ) ডঃ মোঃ মাহমুদুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ডঃ এএসএম আমানুল্লাহ এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধে অনলাইনে সহায়তা প্রদানকারী বেসরকারি উদ্যোগ কান পেতে রই এর প্রতিষ্ঠাতা ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষক ডঃ ইয়েশহিম ইকবাল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডঃ শাহনুর হোসেন। অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আঁচল ফাউন্ডেশন এর গবেষণা ও উন্নয়ন দলের প্রধান সৈয়দ সালমান হায়দার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য রিফাত শারমিন
মুলপ্রবন্ধে সৈয়দ সালমান হায়দার উল্লেখ করেন যে ২০২২ সালের প্রথম আট মাসের আত্মহত্যার সংখ্যা আমাদের জন্য উদ্বেগ জনক। এ বছরে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৪৫ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে এবং তরুন প্রজন্মের কাছে সোশ্যাল মিডিয়াতে এসে আত্মহত্যা করা একটা ট্রেনড হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট ৮ মাসে ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। তার মধ্যে ১৯৪ জনই স্কুল শিক্ষার্থী (৫৩.৩০%)। এর মধ্যে ৭ বছরের এক শিশুও রয়েছে। ১৩ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি, ৭৮.৬%. এর মধ্যে নারী শিক্ষার্থীই ২২১ জন যা মোট আত্মহননকারীদের ৬০.৭১%। আত্মহত্যার কারন হিসেবে প্রেম ঘটিত কারন, সমাজের থেকে না পাওয়ার কারন, পারিবারিক চাপ ও সামাজিক বুলিং দেখা যায়।
অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দ বর্তমানে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাবার জন্য সামাজিক অবক্ষয়, নৈরাজ্য, হতাশা, নেতিবাচকভাবে আবেগ প্রকাশের ধরন , ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা, ভঙ্গুর আত্মমর্যাদাবোধ ও আত্মহত্যাকে বড় ধরনের সমস্যা হিসেবে বিবেচনা না করাকে দায়ী করেছেন। তারা আত্মহত্যার প্রবণতা প্রতিরোধ করার জন্য একটি সমন্বিত পরিকল্পনার কথা গুরুত্তের সাথে তুলে ধরেন। সকল সরকারী ও বেসরকারি সংস্থা যারা বিভিন্নভাবে মানসিক স্বাস্থ্য ও আত্মহত্যা প্রতিরোধে কাজ করছে তাদেরকে একটি সমন্বিত লক্ষ্য ঠিক করে একযোগে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সামনে রেখে ফলপ্রসূ ভাবে কাজ করার উপর জোর দেন।