নোনাজল ঢেউ আঁকে মরমী গান
সর্বভূক কথারা বসে নেই—হাঁটে, থামে, ভাবনায় ফেরে
কখনও কথার কথারা চিত্রা হরিণ ছানার মতো
হাঁপিয়ে
লাফিয়ে
দৌড়ায়!
ইচ্ছেডানার পালক উড়ে যাচ্ছে শৈশব বসন্তের দিকে
স্বপ্নাহত পাখির নিরাশ্রয়ী প্রেম নিরালায় হাসে চুপচাপ
অন্তরঙ্গ শব্দেরা খই ফোটায় বিমর্ষ জানালার ছায়াপাশে
স্মৃতি আখ্যানে আটকা পড়েছে নিয়তির দেহকাল
জ্যোৎস্নাস্রোতের সঙ্গে গলাগলি করে হাতড়ে চলে
এক পসরা
মেঘজল
অন্ধকার
বাড়ন্ত নদীটা হৃদরোগে আক্রান্ত—
বসানো হয়েছে কৃত্রিম হৃদপিণ্ড
নোনাজল ঢেউ তবুও মরমী চোখে গান লিখে অবিরত
প্রণয়ী ডাহুকের নামে..
কৃষ্ণচূড়ার নিচে মার্বেল কোণ শামুক
বেদনার সারোপাখি ক্লান্তির ডানামেলে ওড়ে
—হলুদ ছায়া ফেলে দ্রুতগামী ট্রেনের ওপর
কৃষ্ণচূড়ার তলে
শুয়ে আছে অষ্ট্রেলিয়ান
একটা মার্বেল কোণ শামুক!
হৃদয় উপত্যকায় বইছে কঠিন বিষণ্ণ খরা, তবু্ও—
আর্দ্র দীর্ঘ চুম্বনের বিশ্বাসে নির্বেদ প্রহর কাটে হেলালির
তুমি ছুঁয়ে দিলেই তো ফেরাতে পারো;
প্রেম-কপোকাত ঠোঁটের শুদ্ধ ভালোবাসা…
গণিত
আমি অংকে খুবই কাঁচা
পাটিগণিতে তবু—কখনওই ফেল করিনি
বীজগণিতের সূত্র না জানলেও
বেদনা শিখিয়েছে আমাকে
ভালোবাসার কিছু জ্যামিতিক সূত্রাবলী
সঙ্গম বঞ্চিত-প্রেমঠোঁট থুবড়ে পড়ায়
নিরীহ জীবনের হিসেব কষি এখন রোমান হরফে!
মরমী সন্ধ্যা
বৃষ্টির নরম পরশে ব্যাকুল হৃদয়—
উতলা মরমী সন্ধ্যেবেলা
প্রতীক্ষার কামনা তাড়া করে ফেরে নিয়তির-ঠোঁট
তৃষ্ণার্ত স্বপ্নেরা গোলাপ চুমুক টানে—খেলে অসীমের খেলা
বসন্ত বাতাসে মিশে বাউলের সুর
থেকো না তুমি আর অতোটা বেশি দূরে
অনুক্ত বেদনার দীর্ঘশ্বাস ফেলে অবলা মৃত্তিকা
ফিরে এসো প্রেমময় ঘাস
ফিরে এসো অভিমানী শালিক;
আকাশ ছোঁয়া হৃদয় চোখে
বিস্মৃত গোলাপের বুকে রুপালি গল্পেরা আগুন ঝরায়
ফাগুনের জোস্নারাতে
পূবালী হাওয়া হাতড়ে চলে নৈশ নদীর ঢেউ
নিরাশার শোক কাটিয়ে সবুজ পাতার শব্দে
বসন্ত বাতাসে মিশে ফেরারি বাউলের সুর
স্বপ্ন ভাঙা পাখি উছলে উঠে নতুন মকুলের ঘ্রাণে
ফেলে আসা সময়ের হাত ধরে ফিরে এসো আবার
বসন্ত যৌবনে মুখোমুখি হও, সাজো কৃষ্ণচূড়ার রঙে
স্বপ্নে ফোটা কামনার চুম্বন এঁকে দাও তৃষ্ণার ঠোঁটে
—একাকী মনের শয্যায়…
নিয়তিবৃত্ত
পৃথিবী ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলায়
রহস্যের ঘেরাটোপে বদলে যায় রূপমাধুরী জীবন
নিয়তির নিয়মে
পৃথিবী জানে বদলে বদলে অনন্তকাল
বেঁচে থাকাটাই মৃত্যুর তূণের ছিলায়
এই-তো বিধাতার বেঁধে দেয়া নিয়তিবৃত্ত
মানুষও বদলায়, বদলায় প্রতিশ্রুতি মুখঃনিসৃত
কিংবা প্রতিশ্রুতি নিঃসৃত মুখাবয়বের মন্ত্রজাল
কে করে কার
এই পৃথিবীতে
দেখভাল!
মানুষ জানে না মানুষের জীবনের মানে কী!
জীবন তো—চক্রজালে আঁকড়ে থাকা অমিত
দিকচক্রবালে পড়ে থাকা ভাঙা-শানকি…