ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সচিব, মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সচিব, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, “ইলিশ মাছ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। কিন্তু বর্তমানে ইলিশ মাছের অত্যাধিক দামের কারণে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই ইলিশ মাছ কেনার কথা চিন্তাও করতে পারে না। অন্যদিকে দেশের মধ্যবিত্ত জনগণও এই ইলিশ মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বাজারে ইলিশ মাছের দাম গড়ে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি। এছাড়া ইলিশ মাছের মধ্যে সবচেয়ে সুস্বাদু ইলিশ হলো পদ্মা নদীর ইলিশ। বাজারে পদ্মার ইলিশের দাম গড়ে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি।’
নোটিশে আরও বলা হয়, বাজারে যেসব ইলিশ পাওয়া সেগুলো মূলত অন্যান্য নদীর ও সামুদ্রিক ইলিশ মাছ। অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় এই যে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা না করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ভারতে ইলিশ রপ্তানির ফলে বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারগুলোতে ইলিশের দাম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আরও দুঃখজনক বিষয় এই যে, বাংলাদেশের বাজারদরের চেয়েও কম মূল্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে।
ভারতে রপ্তানি করা ইলিশগুলো বেশিরভাগই পদ্মা নদীর উল্লেখ করে নোটিশে আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, “এমনিতেই পদ্মা নদী থেকে সীমিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায়। তাই এই পদ্মার ইলিশগুলো ভারতে রপ্তানির ফলে বাংলাদেশের বাজারগুলোতে পদ্মার ইলিশ যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশের রফতানি নীতি-২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানিযোগ্য পণ্য নয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ অনায্যভাবে, জণগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।”
নোটিশে পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার যদি বিদেশিদের ইলিশের স্বাদ উপভোগ করাতে চায়, সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন “ইলিশ উৎসব” আয়োজন করতে পারে। যেখানে বিদেশিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে বাংলাদেশে ভ্রমণ করে ইলিশের স্বাদ উপভোগ করার। এমনকি আসন্ন দূর্গা পূজায় ভারতীয়দের আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে বাংলাদেশে ভ্রমণ করে ইলিশের স্বাদ উপভোগ করার। এখানে উল্লেখ্য যে, পর্যটন করপোরেশন আইন (বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন অর্ডার) এর ধারা ৫ অনুযায়ী অনুযায়ী, পর্যটনের উন্নয়ন, বিকাশ, বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করাসহ পর্যটনের সকল প্রকার উৎকর্ষ সাধনের দায়িত্ব পর্যটন করপোরেশনের।
আইনি নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় উক্ত বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।