পোশাকের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বহু আগের। প্রাচীন গুহাবাসী মানুষ থেকে আজকের আধুনিক মানুষ, সবার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হচ্ছে পোশাক। পোশাকের সঙ্গে আবহাওয়া এবং সংস্কৃতির সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। ভিন্ন ভিন্ন আবহাওয়ার মানুষ বিভিন্ন সময়ে তাদের আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পোশাক নির্বাচন করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের মতো উষ্ণ অঞ্চলের মানুষ যতটা সম্ভব লম্বা পোশাক বেছে নিয়েছে রোদ থেকে শরীরকে বাঁচাতে। শীতপ্রধান অঞ্চলের মানুষ আঁটসাঁট পোশাক বেছে নিয়েছে প্রধান পোশাক হিসেবে। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায়, পোশাক নির্বাচনে যুক্ত হয়েছে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সৌন্দর্যবোধ।
প্রাচীন যুগ
বিভিন্ন সময়ে বাঙালির পোশাকেও এসেছে পরিবর্তন। আদি বাঙালিদের পোশাকের সঙ্গে এ যুগের বাঙালিদের পোশাকে রয়েছে বিস্তর ফারাক। কখনো শাসকের প্রভাবে, কখনো ধর্মের প্রভাবে বাঙালি তাদের পোশাকে পরিবর্তন এনেছে। বিভিন্ন প্রমাণ হাতে থাকায় গত কয়েক শতাব্দীতে বাঙালির পোশাকে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে তা যেভাবে বিশ্লেষণ করা যায়, তার আগের সময়ের পরিবর্তন নিয়ে সেভাবে বিশ্লেষণ করা যায় না এবং সেটা নিয়ে কথা বলাও যায় না। বিভিন্ন প্রাচীন ভাস্কর্য ও সাহিত্য থেকে আমরা তার কিছুটা আচ করতে পারি মাত্র।
বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে পুরনো নমুনা ‘চর্যাপদ’। কিন্তু চর্যাপদ থেকে সেকালের নারী ও পুরুষরা কী ধরনের পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার করতেন সে সম্বন্ধে আমরা কোনো ধারণা পাই না। তবে প্রাচীন ও মধ্যযুগের যেসব ভাস্কর্য, পোড়ামাটির ফলক ও পান্ডুলিপির চিত্র পাওয়া যায় তা থেকে আমরা তাদের পোশাক সম্বন্ধে কিছুটা জানতে পারি।
তাদের বেশিরভাগ পোশাকই ছিল লজ্জা নিবারণ ও শীত-গ্রীষ্মসহ বিভিন্ন আবহাওয়ার রুক্ষতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দরকারী ন্যূনতম পোশাক। সেজন্যই সে সময়ে নারী-পুরুষের পোশাকে খুব একটা পার্থক্য ছিল না এবং এ যুগের মানুষের মতো রকমারি পোশাকও ছিল না।
নারী ও পুরুষ উভয়ই পরতেন একটিমাত্র বস্ত্র- শাড়ি অথবা ধুতি। অভিজাত পুরুষরা হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ধুতি পরলেও সাধারণ পুরুষরা অত্যন্ত খাটো ধুতি পরতেন।
নারীরা শাড়ি পরতেন পায়ের কব্জি পর্যন্ত ঝুলের। নারী ও পুরুষরা ঊর্ধ্বাঙ্গে অলংকার ছাড়া আর কিছু পরতেন না। উৎসবে ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অভিজাত নারীরা কখনো কখনো ওড়না ব্যবহার করতেন। সেন আমলে ধনী মহিলারা বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করতেন। নারীরা কানে কচি তালপাতার মাকড়ি এবং কোমরে সোনার তাগা পরতেন। প্রাচীন বাঙালি সমাজে জুতা পরার কোনো রীতি ছিল না।
নারীদের পোশাক
ধর্মবিশ্বাসে বৈচিত্র্য থাকলেও বাংলার হিন্দু-মুসলমানদের পোশাকে খুব একটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না, বিশেষত নারীদের পোশাকে প্রায় কোনো পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। কারণ বাংলায় হিন্দু-মুসলমান দুই ধর্মাবলম্বীর মধ্যেই কঠোর পর্দাপ্রথা মেনে চলা হতো। সেজন্য বিভিন্ন তথ্যসূত্র থেকে পুরুষদের পোশাকের যতটা বর্ণনা পাওয়া যায়, নারীদের পোশাকের ততটা বর্ণনা পাওয়া যায় না। নারীদের ব্যাপারে রক্ষণশীলতা এতটাই প্রকট ছিল যে বিভিন্ন সময়ে পুরুষদের পোশাক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেলেও নারীরা সবসময় প্রায় একই পোশাক পরেছে- শাড়ি।
১০০ বছরেরও কম সময় আগে বাঙালি সাধারণ নারীরা শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ বা পেটিকোট পরত না। অভিজাত নারীদের ক্ষেত্রে অবশ্য সে কথা চলে না। ব্রিটিশ শাসনের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে এসে অভিজাত নারীদের ফুল-হাতা গলাবন্ধ ব্লাউজ পরতে দেখা যায়। অনেক পুরুষ তাদের স্ত্রীদের ব্রিটিশ সমাজে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য আলাদা করে পোশাক তৈরি করিয়ে নিতেন।
ইংরেজ আমল
ইংরেজরা বাংলায় আসার পর তাদের পোশাকের ছাপ পড়তে শুরু করে এ দেশের মানুষের পোশাকে। তবে মুঘলদের পোশাকের মতোই ইংরেজদের পোশাক রাতারাতি সাধারণ মানুষের মধ্যে জায়গা করে নেয়নি। ইংরেজরা এই দেশে আসার পরও বহুদিন এই দেশের মানুষ তাদের পোশাক গ্রহণ করেনি। ধীরে ধীরে প্রথমে অভিজাত এবং পরে সাধারণ মানুষের মাঝে ইংরেজদের অনুকরণে পোশাক পরার প্রচলন শুরু হয়। এ সময়ে কলকাতাকেন্দ্রিক হিন্দু কলেজসহ বিভিন্ন জায়গায় ইংরেজদের মতো পোশাক পরার প্রচলন দেখা যায়। এদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তিনি পুরোদস্তুর ইংরেজদের মতো পোশাক পরতেন।
বাঙালিদের মধ্যে শার্ট খুব জনপ্রিয় হলেও বিশ শতকের আগে বাঙালি শার্ট পরত না। এমনকি বিশ শতকেরও অর্ধেক সময়জুড়ে বাঙালিদের মধ্যে খুব একটা শার্ট পরার চল ছিল না। বাঙালি অভিজাত সমাজে আরেকটি জনপ্রিয় পোশাক হচ্ছে গলাবন্ধ কোট। রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে সেকালের প্রায় সমস্ত অভিজাত ব্যক্তির মধ্যে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অনেক অভিজাত পরিবারের বিলেতফেরত সদস্যরা এদেশে এসেও পাকাপাকিভাবে বিলেতি পোশাক পরতে থাকেন। এদের দেখাদেখি অন্যরাও এই পোশাকে আকৃষ্ট হয়। অনেকের মধ্যে আবার কোট-ধুতি পরার প্রচলন দেখা যায়। এটাও খুব জনপ্রিয় পোশাক ছিল একসময়।
ধুতি ও লুঙ্গি
অভিজাতদের পোশাকে যতটা প্রবলভাবে ব্রিটিশদের ছোঁয়া লেগেছিল, সাধারণ মানুষের মধ্যে কিন্তু ততটা প্রবলভাবে লাগেনি। সাধারণ মানুষ হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে তখনও ধুতি, পাঞ্জাবি, চাদর, লুঙ্গি ইত্যাদি পোশাক পরতেন। হিন্দু-মুসলমান সবাই ধুতি পরতেন।কবি কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে কাজী মোতাহার হোসেন, প্রায় সবাই ধুতি পরতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। ধুতিকে ‘হিন্দুয়ানী পোশাক’ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রয়াস দেখা যায় কিছু কট্টরপন্থির মাঝে।
তবে গ্রামের অনেক সাধারণ মানুষ বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে ধুতির বদলে লুঙ্গি পরতে শুরু করে। দেশভাগের পর পূর্ববাংলা থেকে খুব দ্রুত ধুতি লোপ পেতে শুরু করে। হিন্দু-মুসলমান সবার মধ্যেই ব্যাপকভাবে লুঙ্গি পরার রীতি শুরু হয়।
সমতলে পাহাড়ি ঐতিহ্য
পাহাড়ি পোশাক সমতলে এসে পেয়েছে নিজস্ব আলাদা সত্তা। থামি হয়তো সমতলের বাঙালিরা একইভাবে পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে না। কিন্তু তারা শাড়ি ভালোবাসে। তাই থামির কাপড়কে ব্যবহার করা হচ্ছে শাড়িতে। কখনো আবার আদিবাসী তাঁতেই বৈচিত্র্যময় নকশা দিয়ে শাড়ি বোনা হচ্ছে। মণিপুরি শাড়ি অনেক দিন থেকেই ফ্যাশনে বেশ ট্রেন্ডি। সঙ্গে আছে থামির শাড়িও। আদিবাসী পোশাক থামির নকশা ব্যবহার হচ্ছে সাধারণ তাঁতের শাড়িতেও। কুঁচিতে থাকছে থামির নিচের অংশের ডিজাইন ও নকশা। আর আঁচলে ব্যবহার হচ্ছে থামির ওড়নার অংশের মোটিফ।
পাহাড়ি আদিবাসী পোশাক
আদিবাসী তাঁতে বোনা থামি দিয়েই এখন মেয়েরা সালোয়ার-কামিজ বানিয়ে নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্লাউজের অংশটুকু বড় হয়ে কামিজ, নিচের অংশ দিয়ে সালোয়ার। সঙ্গে ওড়না তো থাকছেই। আর থামির সঙ্গে থাকা ওড়না কিংবা মণিপুরি বাহারি রঙের ওড়না দেশি-বিদেশি যেকোনো পোশাকের সঙ্গেই অনায়াসে মানিয়ে যায়। সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি ফতুয়া, টপস আর কুর্তায়ও অনায়াসে ব্যবহার হচ্ছে থামির ফ্যাব্রিকস। কখনো থামি কেটে বানানো হয়, কখনো আবার অন্য ফ্যাব্রিকসে থামির মোটিফ বা নকশা বসিয়ে ফিউশন ডিজাইন করা হয়।
ডিজাইন ও রঙে ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় সেসব থামি বা পাহাড়ি ফ্যাব্রিকস দিয়ে ডিজাইনাররা বহু আগে থেকেই ফিউশন ডিজাইন করছেন। আর এখন তো ফিউশন শুধু সমতলেই নয়, পাহাড়িরাও গ্রহণ করছে। পাহাড়িরাও তাদের তাঁতে বোনা কাপড় দিয়ে এখন শার্ট, ফতুয়া বানিয়ে পরছে।
মধ্য যুগ
ইন্দো-মুসলিম যুগে এসে মুসলমানদের প্রভাবে পোশাকে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। মধ্যযুগীয় শাসকরা যেসব রুক্ষ অঞ্চলের পোশাক নিয়ে এসেছিলেন, এদেশে এসে তা আর পরিবর্তন করেননি। প্রথমদিকে বঙ্গে এসব পোশাক গ্রহণ করা না হলেও চতুর্দশ-পঞ্চদশ শতাব্দীতে এসে আস্তে আস্তে এ অঞ্চলের মানুষ এসব পোশাক পরতে শুরু করেন। প্রথমে বাদশাহের দরবারে, তারপর অভিজাতদের মধ্যে এবং পরে গ্রামের ধনীদের মধ্যে এসব পোশাক পরার প্রচলন শুরু হয়। প্রাচীন যুগে নারী-পুরুষ উভয়েই একপ্রস্থ কাপড় পরলেও মধ্যযুগে এসে ঊর্ধ্বাঙ্গ, নিম্নাঙ্গ ও মাথায়- মোট তিনটি বস্ত্র পরতে দেখা যায়। মুকুন্দরাম তার ‘কবিকঙ্কণ চণ্ডী’তে পাগড়ি পরার কথা উল্লেখ করেছেন। সেসময় এরকম মুসলমানী পোশাক দরবার ছাড়িয়ে সাধারণ মানুষ এমনকি অন্য ধর্মের মানুষের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে। শেখ জৈনুদ্দিনের আঁকা লেডি ইম্পের ছবিতে দেখা যায়- অভিজাতরা তো বটেই, চাকর-বাকররাও মাথায় পাগড়ি পরে আছে। যাদের এত পোশাক কেনার সামর্থ্য ছিল না তারা অবশ্য আগের মতো শুধু ধুতিই পরতেন।
মুসলমানদের অনেকে ধুতির চেয়ে ছোট একখন্ড কাপড় পরত, যাকে এখন বলা হয় ‘লুঙ্গি’। পনাই ও পাদুকার উল্লেখ থাকলেও মধ্যযুগের বাংলায় চামড়ার জুতা পরার কথা সে যুগের কোনো সাহিত্যে উল্লেখ করা হয়নি। ১৮২০ সালের দিকে আঁকা মহররমের মিছিল ও ঈদের ছবিতে সবাইকে ভালো পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখা গেলেও তাদের পায়ে কোনো জুতা বা পাদুকা ছিল না। এ থেকে ধারণা করা যায়, সে যুগে জুতা পরার কোনো প্রচলন ছিল না।
মুঘলদের পতনের পরও অনেকদিন এদেশের হিন্দু-মুসলমান উভয় ধর্মাবলম্বীরাই মুঘলদের পোশাক পরিধান করতেন। সমাচার দর্পণ পত্রিকায় ১৮৩৫ সালেও উল্লেখ করা হয় যে, বাবু, জমিদার, সেরেস্তাদার ও উকিল ইত্যাদি মহাশয়রা জামা, নিমা, কাবা, কোর্তা ইত্যাদি পোশাক পরতেন।
রামমোহন রায় ও দ্বারকানাথ ঠাকুরদের ছবিতেও তাদের এ ধরনের পোশাক পরতেই দেখা যায়। এসব পোশাকই ছিল অভিজাতদের পোশাক।
রামমোহন রায়, দ্বারকানাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, স্বামী বিবেকানন্দসহ সেকালের সব অভিজাত ব্যক্তি তখনও মাথায় পাগড়ি পরতেন।
নবাবী আমলের পোশাক ইংরেজ আমলে এসে অক্ষুণ্ন থাকলেও নতুন করে যুক্ত হয় চেইন আর ঘড়ি। কামিজ, রামজামা বা লম্বা জামা থেকেই সম্ভবত পরবর্তীতে পাঞ্জাবির উদ্ভব।
সেলাই করা কাপড়
প্রাচীন বাংলায় সেলাই করা কাপড় পরাকে অপবিত্র মনে করা হতো। সেজন্যই নারী-পুরুষ শাড়ি ও ধুতি পরতেন। মুসলমানরা এদেশে আসার আগে সেলাই করা কাপড় পরা হতো না। মুসলমানরা ধীরে ধীরে এ রীতি চালু করে এবং সমাজে ‘দর্জি’ নামক এক নতুন পেশার উদ্ভব হয়।
সালোয়ার কামিজ অভিজাত মুসলমানদের মধ্যে উর্দুভাষী নারীদের অনেকে সালোয়ার কামিজ পরলেও বাঙালি মুসলিম নারীরা তা পরতেন না। পরবর্তীতে মুসলিম নারীরা তো বটেই বাঙালি হিন্দু নারীরাও সালোয়ার-কামিজ পরতে শুরু করেন।
বাঙালির বর্তমান পুরুষদের মাঝে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় পোশাক শার্ট-প্যান্ট, টি-শার্ট ও গেঞ্জি। বিভিন্ন উৎসবে বা অনুষ্ঠানে পাঞ্জাবি-পায়জামা থেকে শুরু করে কোট-স্যুট-ব্লেজার পরার রীতিও চালু আছে বাঙালি পুরুষদের মাঝে। বাঙালি নারীরা বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানে শাড়ি পরলেও আগের চেয়ে শাড়ির প্রচলন কমে এসেছে অনেক। বর্তমানে নারীরা সবচেয়ে বেশি পরেন সালোয়ার-কামিজ।
আরামদায়ক পোশাক পোশাক দেখতে যেমনই হোক না কেন তা হওয়া চাই আরামদায়ক। বাঙালির মাঝে কেউ কেউ পশ্চিমা অনুকরণে কোট-স্যুট-জিন্স পরেন, কেউ বা ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রভাবে পরেন জোব্বা বা আলখাল্লা। আগে বাঙালিরা কোর্তার পাশাপাশি মাথায় পরেছেন পাগড়ি। সবখানেই এখন জুতার পাশাপাশি মোজাও পরা হচ্ছে। বাঙালি নারীরা বিভিন্ন পশ্চিমা পোশাক পরছেন। বাঙালি হয়তো বছরের পর বছর এসব পোশাক পরতে পরতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
বাঙালি নারীদের পোশাক নিয়ে বর্তমানে নানান ধরনের অপপ্রচার সমাজে চালু আছে। এরমধ্যে কিছু আম জনতা আছে, না বুঝে না জেনে নারী পোশাক নিয়ে খুব বেশি উৎফুল্ল হয়ে নারী বিদ্বেষমূলক উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে অহরহ।
অনেক বছর আগে বাঙালি নারী পুরুষ কী ধরনের পোশাক পরিধান করতো এই বিষয়ে সামান্যতম জ্ঞান আমাদের মাঝে নেই। যার জন্য আজ নারীদের পোশাক নিয়ে এতো সমালোচনা।আমি আমার নিজের ছোট বেলায় দেখেছি –
আমার দাদি, নানীরা শাড়ি পরতো হাঁটু পর্যন্ত আর ব্লাউজ কী এটা ছিলো উনাদের কাছে স্বপ্নের মতো। গ্রামের মেয়েরা কাড়প পরতো। তারপর ধীরে ধীরে সালোয়ার কামিজ চলে আসলো।
বোরকা, হিজাব এসব পোশাক মানুষ তখন চিনতো না। যারা এখন নারীদের পোশাক নিয়ে গুজব ছড়ান, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- বলুন তো আজ থেকে ৩০ বছর আগে বাংলাদেশের ২% মহিলা বোরকা বা হিজাব পরতো কিনা?
সব মিলিয়ে বাঙালি হুজুগে। এটা নতুন কিছু নয়।
লেখক: ফিরোজ মোল্লা
সোস্যাল মিডিয়া থেকে।