আজকাল
বিপদেরা চুপচাপ ওত পেতে থাকে,
নদীর প্রতিটি বাঁকে-বাঁকে।
সাবধান! সাবধান মাঝি
শ্বাপদের চেয়ে হিংস্র মানুষের কারসাজি।
আলো নেই,
চারিদিকে জমেছে আঁধার চাপচাপ
মানুষকে ভালবাসা ভুল নয়, পাপ।
কিছু অভিমান
কিছু অভিমান বাষ্পের মতো মনের আকাশে জমে
শ্রাবণের রাতে অশ্রুধারাতে কিছু অভিমান কমে।
জীবন মানে তো যাওয়া আর আসা,বাষ্প-বৃষ্টি-মেঘ
কিছু হাসি আর কিছু অভিমান আর কিছু উদ্বেগ।
পরোয়া করিনা জীবন মঞ্চে যখন দুঃখ আসে
অমলিন থাকি,রাতের গভীরে যেভাবে সূর্য হাসে।
কিছু হাসি আর কিছু অভিমান একাকার হয়ে যায়
মিল্কিওয়ে বা এন্ড্রোমিডাতে আরও দূর সীমানায়।
জীবন মৃত্যু দু’য়ে মিলেমিশে বুদবুদ হয়ে নামে
চুপিচুপি ওই আলপথ ধরে আকাশের নীল খামে।
মানুষ খোঁজা
মাঝেমাঝে খুব একা লাগলে
আমি মানুষ খুঁজি
গাছের মতো প্রিয় মানুষ
অরণ্যের মতো গভীর মানুষ
পাখির মতো প্রাণবন্ত মানুষ
নদীর মতো দিলখোলা মানুষ
পাহাড়ের মতো উদার মানুষ
আকাশের মতো উন্মুক্ত মানুষ
প্রকৃত মানুষ খুঁজে পেলে
তাকে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করে
আমার হৃদয়ের চোরা কুঠুরিতে
আমার প্রতিটি আলোকিত কক্ষ,
প্রতিটি সীমাহীন অন্ধকার
তাকে দেখাতে ইচ্ছে করে
তাকে পেয়ে খলবল করে কথা বলতে শুরু করে
আমার গুমরে ওঠা দুঃখগুলো
ধর্ষক
আজ এইদিকে রেপ
কাল ওই দিকে বোম
জনগণ চুপচাপ
নীরো দ্যাখে, পোড়ে রোম।
চারিদিকে পোড়া লাশ,
গন্ধটা পাচ্ছেন?
চর্ব চোষ্য খেয়ে
বেশ সুখে বাঁচছেন।
আপনি তো চুপচাপ,
আপনি তো দর্শক
তাহলে তো মহাশয়
আপনিও ধর্ষক।
ফেরা
অতি যান্ত্রিকতায় যারা ভেসে গিয়েছিল
তারা আকাশ থেকে ফিরে আসছে
তাদের প্রত্যেকের হাতেই এখন লাল গোলাপ
প্রাচীন গুহামানব এখন তাদের নায়ক
তারা ভেবেছিল আকাশ থেকে পেড়ে আনবে আলো
ভেবেছিল নক্ষত্র থেকে নিয়ে আসবে
এক সমুদ্র সুখ
ভেবেছিল পাখির চেয়েও দ্রুত উড়ে গিয়ে
জয় করবে ব্রহ্মাণ্ড
অথচ নিঃস্ব হয়ে তারা ফিরে এসেছে
প্রাচীন বাংলার লালমাটির গ্রামে
নিকানো উঠোন, ধানের গোলা,
বিদ্যুৎহীন রাতে জ্যোৎস্না মেখে
তারা উঠোনে গড়াগড়ি খায়
তাদের স্বপ্নে হামাগুড়ি দিয়ে হেঁটে বেড়ায়
গ্রামের আধান্যাংটো শিশুরা।
পুনরুত্থান
নিভু নিভু আকাশে যেই ঘনিয়ে এল মেঘ
তোমার চোখের তারায় তারায় দেখেছি উদ্বেগ।
অনেক চেনা কেমন করে খুব অচেনা হয়
জীবনখাতা গোলকধাঁধা সরলরেখা নয়।
শান্ত জলে হঠাৎ হঠাৎ ছলকে ওঠে ঢেউ
ঘুমের মাঝে চমকে দেখি পাশেতে নেই কেউ।
নেই তাতে কি, একলা বাঁচি, একাই টানি দাঁড়
স্বপ্ন দেখি আকাশ ছোঁব, সমুদ্দুরের পার…