টাইফুন হিন্নামনোরের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ভূগর্ভস্থ কার পার্কিংয়ে পানিতে ডুবে ৭ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতের দিকে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর পোহাংয়ের ঘটেছে এই ঘটনা।
সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার পূর্ব উপকূল ও মঙ্গলবার দেশটির দক্ষিণ উপকূলে আছড়ে পড়েছে চলতি বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন হিন্নামনোর। ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশটির অধিকাংশ অঞ্চলে প্রবল ঝড়ো হাওয়া,বৃষ্টি ও উপকূলবর্তী শহরগুলোতে জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম ইওনহাপ নিউজের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিকূল আবহাওয়া ও জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাসের জেরে ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সকালে ভবনের বাসিন্দাদের ভূগর্ভস্থ কার পার্কিং থেকে নিজেদের গাড়ি সরিয়ে নিতে বলেছিলেন।
ভবনটিতে বসবাসকারী অন্যান্য লোকজন সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে গাড়ি সরিয়ে নিলেও ৯ জন এই সময়ের মধ্যে গাড়ি সরিয়ে নিতে ব্যর্থ হন। সন্ধ্যার পর ঝড়ের গতি বাড়তে থাকলে তারা সেই ভূগর্ভস্থ গ্যারেজের নিচে ঢোকেন নিজেদের গাড়ি বের করে আনতে।
কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। গ্যারেজে পৌঁছানোমাত্র জলোচ্ছাসের পানি গ্রাস করে করে নেয় তাদের।
উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের বরাত দিয়ে ইওনহাপ নিউজ জানিয়েছে, ৯ জনের মধ্যে ২ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঁচতে গ্যারেজের সিলিংয়ের পাইপে প্রায় ১২ ঘণ্টা ঝুলে ছিলেন তারা।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইয়োল মৃতদের প্রতি গভীর শোক জানিয়েছেন। ঘটনাটিকে ‘বিপর্যয়’ উল্লেখ করে এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘এই বিপর্যয়ের সংবাদ শোনার পর থেকে গতকাল সারারাত আমি ঘুমাতে পারিনি।’
শোকবার্তায় প্রেসিডেন্ট জানান, ইতোমধ্যে পোহাং শহরকে ‘স্পেশাল ডিজাস্টার জোন’ ঘোষণা করেছেন তিনি এবং বুধবারের দিকে তিনি পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে যাবেন।
টাইফুন হিন্নামনোরের প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল ঝড়ো হাওয়া, বৃষ্টি ও জলোচ্ছাসে সোম ও মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে নিহত হয়েছেন মোট ১০ জন। ঝড়ের কারণে দেশটির অধিকাংশ শহরে কমবেশি ক্ষয়ক্ষতি হলেও, সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে পোহাং।
শহরটির সমুদ্রতীরবর্তী হোটেল-রিসোর্ট সব ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ওই ৭ জন ব্যতীত এখন পর্যন্ত পোহাংয়ে আর কোনো প্রাণহানির সংবাদ পাওয়া যায়নি।