জলশূন্য শ্রাবণে
তবুও গোলাপ: তমাল গাছের এমনি স্বভাব;
স্পর্শ করে না বৃষ্টি।
মুঠোতে কেবল ভরে রাখে জল; আষাঢ়ের যেমন ছল।
এবার তার জাত-চরিত্র সম্পূর্ণ আলাদা।
পলিতে জল নেই: মরুর বুক খালি;
তবু ছড়াতেছে উটের ঘ্রাণ।
পলিতে গোলাপ— সেও এক সাহারার বুকে বৈদিক আচার্য।
সিফিলিস
একদিন আমাদেরও ঢের দিন ছিলো ভালো
তখনও হয় নাই আঁধার-কালো।
মাটির রেখায় লাঙ্গলের ফলা আর অঘ্রানের ঘ্রাণে
কেও কেও বোনে-শস্যের বীজ:
তারপর চকচকে রুপালি মাছের পিঠে দিন শেষে অস্তাচলে
ইতিহাস আর ঐতিহ্য;
কালক্ষেপন করে কেবল মানুষের দীনতা-অন্ধবিশ্বাস;
অথচ আসে না কোনো তারণকণা: আসে না কোনো মহাত্মা;
ভোরের আলোর মতো কোনো ঈশা…
তথাপি, কালো ডোরে শাড়ি পরিহিতা নবীতুনের গল্প
উপন্যাস কিংবা জীবনী লেখা হোক এখনি;
হারিয়ে যাবার আগেই;
সময় বদলায়
ভাগ্যের দীনতা বদলায় না কেবল মানুষের
দীনজনতার কাল এখন হস্তির গর্ভে-
যে রাষ্ট্র সিফিলিসে আক্রান্ত
সে রাষ্ট্র কবে আর বুঝবে?
জনগণই রাষ্ট্রের আয়ুর্বেদিক;
ইউটোপিয়ান প্রসব বেদনায় ঘোর-আচ্ছন্ন সুশীল সমাজ;
যেনো সমুদ্রের নোনা স্বগতোক্তি-পিরানহা’র ভোঁতা মুখে
প্রতারণার বিষদাঁত..
আসা যাওয়ার পথে
কে চলে গেলো; আর কে থাকলো
সে সব আবেগের হিসেব
চা’য়ের কাপে কড়া উষ্ণতায় গলে গেছে কবে— অবশেষে:
যে প্রেমিক, সে পথ তৈরি করে দেয়;
মিথ্যে আশায়— ফুলের মুখে নুন দেয় না।
তুমি ঈশ্বর না হয়ে যদি মানুষ হতে
তুমি,
পথ শেষ করে দাও যেখানে,
সেখান থেকেই আবার পথের শুরু:
এমন কূটবাক্য বুঝার আগেই বুঝেছি,
তুমি ঈশ্বর না হয়ে যদি মানুষ হতে;
যদি জানতে-
সে পথ কতোটা দুরূহ ছিলো!
তোমার রক্তাক্ত কাঁচ বিছানো পথে…
শেকড়
কেমন করে ফিরতে হয়
ঐ সমস্ত রাতে,
জোনাকির গালে চুমু খেয়ে
করেছি বোতলবন্দী!
নিশিন্দার ঘ্রাণে নেশাগ্রস্ত চাঁদ
আর ধবল জ্যোৎস্নার মাতলামো:
আঙুলে গুণে রাখা এক’শ আটটি তারা
তারার মেলায় হারিয়ে যাওয়া
আঙুলে গুণে রাখা এক দুই তিন
এমন অসংখ্য শুকতারা—
বেলা বাড়লে হারিয়ে যায় সব
এভাবে আমরা শুধু হারাতে থাকি জীবনভর।
এভাবে হারিয়ে যায় জলের ভাষা
বয়স
কলের গান,
কলার ভেলায় চড়ে
গুণে রাখা ঢেউ
শুষ্ক ভুমিতে পায় না আর
জলের তল।
যেখানে ছিলো তরলাবাঁশের ঝাড়
ভূতের ভয়—
দিঘীর কালো জলে সিথান দিয়ে শুয়েছিলো যে ঝুমকো জবা
তার কথা এখর আর কেউ বলে না।
কেউ আর বলে না,
বিন্নিধান আর কলমিশাকের আদ্যোপান্ত
কিংবা পাড়ার সব থেকে উচ্ছ্বল কিশোরীর
নাইওর যাওয়ার গল্প…
সহজ পথ
ইদানীং ‘তুমুল’ বলে কোনো শব্দ নেই আমার।
নিজেকে বলেছি, ধীর হও
আগুনে জ্বলছো! তবু শান্ত থাকো
ভীষণ শূন্য হও
শূন্যতায় স্থিতি ও শান্তি আনো।
তবু যদি কিছু হারিয়ে যায় কদাচিৎ
তখন দিগন্তের পানে চাও;
এক চাঁদেই জগত উজ্জ্বল হয়
আলো কারো জন্য কম অথবা বেশি তো নয়।