বাঙালির শোকের মাস আগস্টের ১ থেকে তারিখ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৫৭ টি সড়কপথ দুর্ঘটনায় ৬০৩ জনের প্রাণ ঝরেছে, আহত হয়েছে ২৯৯০ জন। এ মাসে নিহতদের মধ্যে ৫০% শিশু-কিশোর-তরুণ। যাদের বয়স ৭ থেকে ২৫ বছর এবং অধিকাংশই শিক্ষার্থী। বাকি ২০% বৃদ্ধ; যাদের বয়স ষাটোর্ধ্ব। বিভিন্ন বয়সীদের সড়কপথ দুর্ঘটনার সংখ্যা ৩০%। ৩ হাজার ৭৫৭ টি দুর্ঘটনার ৬০% ঘটেছে বাইকলেন না থাকা এবং সড়কপথের বেহাল দশার কারণে।
২৬ টি জাতীয় দৈনিক, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও ইলেকট্রনিক্স চ্যানেলে প্রকাশিত-প্রচারিত তথ্যর পাশাপাশি সারাদেশে সেভ দ্য রোড-এর স্বেচ্ছাসেবিদের তথ্যানুসারে- মহাসচিব শান্তা ফারজানা প্রেরিত প্রতিবেদনে জানানো হয়- বাইক লেন না থাকায় এবং দ্রুত গতিতে মোটর সাইকেল চালানোর কারণে ১ হাজার ৬২ টি দুর্ঘটনায় আহত ৭৫০ এবং নিহত হয়েছে ৯২ জন; অসাবধানতা ও ঘুমন্ত চোখে-ক্লান্তিসহ দ্রুত চালানোর কারণে ৮৩৯ টি ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫৬০ এবং নিহত হয়েছে ৬৮ জন; খানা খন্দক, বিশ্রাম ব্যতিত একটানা পরিবহণ চালানোসহ বিভিন্ন ৮৯৬ টি বাস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ৯১৮ জন এবং নিহত হয়েছেন ২৫৫ জন; পাড়া-মহল্লা-মহাসড়কে অসাবধানতার সাথে চলাচলের কারণে লড়ি-পিকআপ-নসিমন-করিমন-ব্যাটারি চালিত রিক্সা-সাইকেল ও সিএনজি দুর্ঘটনা ঘটেছে ৯৬০ টি আহত হয়েছে ৭৬২ জন এবং ১৮৮ জন নিহত হয়েছে। এছাড়াও ১ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নৌপথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৫৫ টি। আহত ৩৭৭ জন, নিহত হয়েছে ১৫ জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন ৩৪ জন রেলপথ দুর্ঘটনা ১৬৬ টি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ১৭৪ জন এবং নিহত হয়েছে ১৯ জন। আকাশপথে কোন দুর্ঘটনা না ঘটলেও বিমানবন্দরে চরম অব্যবস্থাপনার কারণে শারীরিককভাবে অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৪ জন।
সেভ দ্য রোড-এর চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, মহাসচিব শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, আইয়ুব রানা, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল-এর সহ-সভাপতি আনজুমান আরা শিল্পীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে আগস্ট মাসের এই প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি আলোচ্য তা হলো- বাইক লেন না থাকার পাশপাশি সড়কপথের বেহাল দশায় সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা যেমন বেড়েছে, বেড়েছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও। ২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্বিদ্যালয় থেকে আত্ম প্রকাশের পর গত ১৫ বছর ধরে সেভ দ্য রোড পথদুর্ঘটনারোধে দেশের সকল সড়ক-মহাসসড়ক ও সেতুতে বাইকলেন, পথচারিদের জন্য ফুটপাত এবং বাইসাইকেল লেন-এর দাবি জানিয়ে আসছে। সেভ দ্য রোড নেতৃবৃন্দ বলেন, জুন মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধনের যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনও পদ্মাসেতুতে বাইক লেন-এর দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছিলাম; তখন বাইকলেন-এর ব্যবস্থা করলে আর স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে বাইক নিষিদ্ধ করতে হতো না। শোকের মাসে এসে সারাদেশে সকল সড়ক-মহাসড়ক- সেতুতে দুর্ঘটনা তুলনামূলক না কমায় অনতিবিলম্বে বাইক লেন, গতিসীমা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন, সিসিটি ক্যামেরা স্থাপন-পর্যবেক্ষণ এবং ৫ কিলোমিটার অন্তর অন্তর পুলিশ বুথ স্থাপনের জন্য পুনরায় সুপারিশ করছি। যদি এই সুপারিশের আলোকে পদক্ষেপ না নেয়া হয়; তাহলে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।