বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগে সিনেমাটির পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে গত ১৭ আগস্ট মামলা দায়ের করেছিলেন বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নারগিস সুলতানা। তাকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে চলচ্চিত্র অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি সিনেমা আবারও দর্শকদের হলে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন। এই সিনেমাগুলোর একটি “হাওয়া”। এই সিনেমার পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম। আসার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি। সেই মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “মামলাটি যে কর্মকর্তা দায়ের করেছেন, তাকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আইনের যদি ব্যত্যয় হয়ে থাকে তাহলে পরিচালককে নোটিশ করতে পারতেন। সরাসরি কোর্টে গিয়ে মামলা করা সমীচীন হয়নি।”
“শনিবারের বিকেল” সিনেমাটি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় হলি আর্টিজানে হামলার ঘটনার ওপর ভিত্তি করে সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে দু’জন পুলিশ অফিসার মারা গেছেন। আমাদের পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে জঙ্গিদের দমন করেছিল।”
তিনি আরও বলেন, “সেন্সর বোর্ডের অভিমত, সেই বিষয়গুলো সিনেমাটিতে আসেনি। সেজন্য এসব দৃশ্য সংযোজন করতে বলা হয়েছে। কিছুটা করা হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছে। কিন্তু সেটিও যথেষ্ট নয়। সেগুলো সংযোজন হলে আমি মনে করি এই সিনেমা রিলিজ করার ক্ষেত্রে যে সমস্যা আছে, তা কেটে যাবে।”
এর আগে “হাওয়া” সিনেমার পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। ২৮ আগস্ট এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা দীপংকর বর।
দীপংকর বর এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান, এক আবেদনে পরিচালক সুমন অপরাধ দমন ইউনিটকে জানিয়েছেন, তিনি বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২–এর বিষয়ে অবগত ছিলেন না। তাই তিনি আপস নিষ্পত্তি চান। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে।
বন্য প্রাণী আইন, ২০১২–এর ধারা ৪৩ মোতাবেক বাঘ ও হাতি হত্যার মামলা ছাড়া সব ধরনের মামলা আপসযোগ্য; ফলে এ আবেদন করা হয়েছে। আদালত মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি শুনেছেন এবং পরবর্তী তারিখে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন।