প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পিরোজপুরের কচা নদীর ওপর নির্মিত অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর উদ্বোধন করবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেতু নির্মাণ প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাসুদ মাহমুদ সুমন।
তিনি জানান, অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে “বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব”।
তিনি আরও জানান, ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কচা নদীর ওপর বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা সড়কের বেকুটিয়া পয়েন্টে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সেতুর আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয়। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষে করেছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান “চায়না রেলওয়ে ১৭তম ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড”।
সেতুটি নির্মাণ শেষে গত ৭ আগস্ট চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র উপস্থিতিতে ঢাকার চীনা দূতাবাসের ইকনোমিক মিনিস্টার বাংলাদেশর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি হস্তান্তর দলিলে স্বাক্ষর করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিক্রমে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সেতুটি উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করেন।
মাসুদ মাহমুদ সুমন আরও জানান, প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ মূল সেতুটির উভয় প্রান্তে ৪৯৫ মিটার ভায়াডাক্টসহ সেতুটির দৈর্ঘ প্রায় ১,৫০০ মিটার। ৯টি স্প্যান ও ৮টি পিয়ার বিশিষ্ট ১৩.৪০ মিটার প্রস্থ সেতুটির পিরোজপুর ও বরিশাল প্রান্তে এক হাজার ৪৬৭ মিটার সংযোগ সড়কসহ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন রাখতে আরও দুটি ছোট সেতু ও বক্স কালভার্ট নির্মিত হয়েছে।
তিনি জানান, সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৮৯৪ কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৬৫৪ কোটি ৭৯ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছে চীন সরকার। বাকি ২৩৯ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা নিজস্ব অর্থায়নে।
পিরোজপুর ১ আসনের এমপি এবং মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম বলেন, “ব্রিজ উদ্বোধন হলে পিরোজপুরের সঙ্গে দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের সমগ্র জেলা। এছাড়া মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত সড়ক পথে আর কোনো বাধা রইলো না। সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হলো। ফলে পিরোজপুর জেলার অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি বেকার সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হবে বলে এলাকা বাসী মনে করেন।”
এ বিষয় পিরোজপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও পৌর মেয়র মো.হাবিবুর রহমান মালেক জানান, আগামী ৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আরেকটি স্বপ্নের সেতু উদ্বোধন করছেন। এই সেতুটি উদ্বোধনের ফলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান ও ব্যবসায়ীদের অনেক উন্নতি সাধন হবে।