দু’দিন আগে পৈত্রিক বসতভিটার ওপরে থাকা হযরত আলী অবৈধ টং দোকান অপসারণে থানায় অভিযোগ করেছিলেন জমির মালিক শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের গুঁধিবাড়ি গ্রামের মৃত লক্ষীকান্ত লাহিড়ীর ছেলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু প্রানোদাকান্ত লাহিড়ী। বিষয়টি কৈজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোয়াজ্জেম হোসেন (খোকন)কেও জানিয়েছিলেন প্রানোদাকান্ত! কিন্তু, চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে আগেই কেনো থানায় অভিযোগ দেয়া হলো? এতে মনোক্ষুন্ন হয়ে এদিন শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সকালে কৈজুরি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোয়াজ্জেম হোসেন (খোকন মাষ্টার) ইউপি সদস্য ও গ্রাম প্রধানদের সাথে নিয়ে প্রানোদাকান্তের বাড়িতে দেড় ঘন্টা গ্রাম্য শালিষ বৈঠক করে প্রানোদাকান্তের পৈতৃক বসতভিটায়ই হযরত আলীর দোকান রাখার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলেন যা রীতিমতো দুর্বলের ওপর সবলের জবরদস্তি বা বিচারের নামে প্রহসন হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দসহ সুধীমহল। এ ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
থানায় দাখিলকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের গুঁধিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সংখ্যালঘু প্রানোদাকান্ত লাহিড়ীর পৈতৃক সম্পত্তির ওপর একই গ্রামের মৃত খলিল প্রামাণিকের ছেলে হযরত আলী (৪০) টং দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছিলেন। টং দোকনটি সরিয়ে নিতে বার বার অনুরোধ করলেও হযরত তাতে কর্ণপাত না করায় দোকানটি সরিয়ে নিতে দু’দিন আগে থানায় অভিযোগ করেন সংখ্যালঘু নিরীহ প্রানোদাকান্ত। এর মধ্যে পুলিশ ঘটনার তদন্তকাজ শুরু করলে অবৈধ দখলদার হযরত আলী সেখানে দোকান রাখতে কৈজুরি ইউপি চেয়ারম্যানের স্মরনাপন্ন হন। এরই প্রেক্ষিতে এদিন সকাল ১০ টায় কৈজুরি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোয়াজ্জেম হোসেন (খোকন মাস্টার) এর নেতৃত্বে ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান চুন্নু, গ্রামপ্রধান রেজাউল করিম, জুবায়ের, রওশন প্রাং, হাতেম, আব্দুর রহমানসহ এলাকার প্রভাবশালীরা সংখ্যালঘু প্রানোদাকান্তের বৈধ দাবি মেনে; অবৈধ দখলদার হযরতের পক্ষে রায় দেন।
এ বিষয়ে অবৈধ দখলদার হযরত ও তার বড় ভাই আব্দুল খালেক বলেন, ‘জমির মালিক প্রানোদাকান্তই। চেয়ারম্যান সাহেব তার সাথে আপোষ করে দিয়েছেন।’
কৈজুরি ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, আমি এ বিষয়ে বিচারে কোন কথা বলিনি। চেয়ারম্যান সাহেবই রায় দিয়েছেন।’
অন্যদিকে, কৈজুরি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোয়াজ্জেম হোসেন (খোকন) বলেন,’টং দোকানের পাশেই গুঁধিবাড়ি সরকারি প্রাইমারি স্কুলের ৬/৭ ‘শ ছাত্রছাত্রীর সদাই কেনার সুবিধার্থে প্রানোদাকান্তের জমিতে হযরতের টং দোকান রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে গ্রামবাসী। প্রানোদাকান্তের সাথে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শাহজাদপুর পৌর শাখার সভাপতি রতন বসাক ও সংগ্রামী সাধারন সম্পাদক মানিক সরকার প্রহসনের এ রায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ সংখ্যালঘু প্রানোদাকান্ত লাহিড়ীর পৈতৃক বসতভিটায় অবৈধভাবে নির্মান করা হযরতের টং দোকান দ্রুত সরানো না হলে মানববন্ধন কর্মসূচিসহ আন্দোলনের মাধ্যমে দোকান সরাতে বাধ্য করা হবে।’
সংখ্যালঘুর ওপর চাপিয়ে দেয়া প্রহসনের এ বিচারে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে এবং দ্রুত অবৈধ ওই দখলদারের দোকান সরাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে করেছে স্থানীয় সনাতনী নেতৃবৃন্দসহ আপামর হিন্দু সম্প্রদায়।#