বৈরী আবহাওয়ায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে ডুবে গেছে ট্রলার। কোনো রকমে ট্রলারে থাকা ড্রাম ধরে দুদিন ভাসতে থাকেন উত্তাল বঙ্গোপসাগরে। ভাসতে ভাসতে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়া বাংলাদেশের ৩২ জেলেকে উদ্ধার করেছে দেশটির কোস্টগার্ড।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে মোংলা কোস্টগার্ডে উদ্ধার ব্যক্তিদের হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া এসব জেলের বাড়ি পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায়।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি বলেন, “গত ১৮ ও ১৯ আগস্ট বৈরী আবহাওয়ায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে মাছ ধরার এফবি জান্নাতুল ফেরদৌস, এফবি আব্দুল্লাহ-১, এফবি ছগির ও এফবি মায়ের দোয়া ভাসতে ভাসতে বাংলাদেশ সমুদ্রসীমা অতিক্রম করে ভারতীয় জলসীমায় চলে যায়। এ সময় সমুদ্রে টহলরত অবস্থায় ভারতীয় কোস্টগার্ড ২০ আগস্ট সকাল সাড়ে ৭টায় ১০ জেলেকে উদ্ধার করে। পরে তাদের মাধ্যমে ভারতীয় কোস্টগার্ডের এয়ারক্রাফটের মাধ্যমে বাকি নিখোঁজ আরও ২২ জেলেকে উদ্ধার করে।”
তিনি আরও বলেন, “উদ্ধার হওয়া ৩২ জেলেকে মঙ্গলবার দুই দেশের কোস্টগার্ড সমঝোতার মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ রেখায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জাহাজ তাজউদ্দীনের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর বাংলাদেশ কোস্টগার্ড জাহাজ অপরাজেয় বাংলায় করে জেলেদের কোস্টগার্ডের মোংলা সদর দপ্তরে নিয়ে আসে।”
উদ্ধার হওয়া এনায়েত চৌধুরী (২২) পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার বাসিন্দা, ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার ইউসুফ (৩৮), বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার ফয়সাল (২০) ও পটুয়াখালী জেলার মহিপুর উপজেলার রাব্বি (২৫) বলেন, “গত ১৫ আগস্ট সমুদ্রে মাছ আহরণের উদ্দেশে রওনা হই। এরপর ১৮ ও ১৯ আগস্ট ঝড়ের কবলে পড়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পানি ঢুকে পড়ে চারটি ট্রলারই ডুবে যায়। এ অবস্থায় পরে তারা তাদের ড্রাম ধরে সাগরে দুদিন ধরে ভাসতে থাকেন। এই দুদিন তারা অভুক্ত অবস্থায় থেকে জীবনের আশা ছেড়ে দেন। তাদের মতো বাকিদেরও একই অবস্থা হয়।”
জেলেরা জানান, ঝড়ের কবলে পড়া চারটি ট্রলারে ৪৭ জন জেলে ছিল। এরমধ্যে ভারতীয় কোস্টগার্ড ৩২ জনকে উদ্ধার করলেও বাকিরা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তবে তারা বেঁচে নেই বলে নিশ্চিত করেছেন এসব জেলে।