‘ঘোড়েল’ পর্ব – বারো

মুসা আলি
মুসা আলি
22 মিনিটে পড়ুন

প্রদীপের হাতে মালতীকে গুঁজে দিয়েও সুবিমল ভিতরে ভিতরে এতটুকু স্বস্তি পাচ্ছিলেন না, ভেবেছিলেন, ছেলেটা ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়তে বাধ্য হবে, মনের তলানিতে নেমে আর উঠতে পারবে না কিন্তু টানা কয়েক দিনের ঘটনাক্রম অন্য সূত্র জানান দিতে থাকল। প্রদীপ যে ঘটনার দিনে মালতিকে ছেড়ে গভীর রাতে বাড়ি ছাড়া হয়ে গিয়েছিল, সেই খবর সুবিমল ভোররাতে জয়ের মাধ্যমে অবগত হয়েছিলেন। ছেলেটা নিজের অবস্থা শক্তিশালী করতে যে দুটো নতুন পথ বেছে নিয়েছে তা সম্পূর্ণ তাঁর বিরুদ্ধে চলে গেছে বলেই ভাবলেন। ইতিমধ্যে নিজের উদ্যোগে জয়ন্ত দেবনাথের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতে পেরেছে। তার পক্ষে গর্জন শুরু করেছে দেবনাথ নিজেই, এমন কী মালতির গর্ভে ছেলেটার DNA টেস্ট করালে একজন রাজনীতিক পাকা ক্রিমিনাল হয়ে দেখা দিতে পারেন বলে চারদিকে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তির যে তাঁর দিকেই, তা বুঝতে সুবিমলের কোনো অসুবিধা হল না।
আরেকটা বড়ো খবর সুবিমলের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে চলে গেছে। স্কুল থেকে কলেজ পর্যন্ত ঘনিষ্ট ক্লাসমেট রাজিবুল, কেমিষ্ট্রিতে এম.এস.সি, প্রথম শ্রেণি পাবার পর স্থানীয় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কয়েক বছর আগে শিক্ষকতায় যুক্ত হয়েছিল,সেও নাকি গতকাল বাজারে চায়ের দোকানে মন্তব্য করেছে, মালতির এত বড়ো সর্বনাশ সুবিমল ছাড়া অন্য কেউ করতে পারে না। উৎফুল্ল প্রদীপ দেবনাথকে সঙ্গে নিয়ে রাজিবুলের কাছে গিয়েছিল বলে শোনা যাচ্ছে। থানার মোড়ে ডেপুটেশন দেওয়ার সময় রাজিবুল উপস্থিত থাকার জন্য সম্মতিও দিয়ে দিয়েছে। সুবিমলের মস্ত বড়ো ভয় সেখানেই। ভাবতে বাধ্য হয়েছেন, ছক কষে ঢ্যামনা দেবনাথকে সরাতে না পারলে বাকি সকলকে কিছুতেই ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া সম্ভব হবে না। তখন নিশ্চয় রাজিবুল নতুন করে এগোতে সাহস পাবে না, নিজে বাঁচি তো বাপের নাম মন্ত্রে ঢুকে পড়তে বাধ্য হবে। একবার ভাবলেন, জয়কে পাঠিয়ে রাজিবুলকে বুঝিয়ে সুজিয়ে ঠান্ডা করার চেষ্টা নিতে হবে, কিছুতেই DNA Test-এর দিকে কাউকে এগিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।
রবিবারের সকালে সূর্যের সাতরঙ ছড়িয়ে পড়ল বাড়ির উঠোনে। বেশ ঝকঝকে লাগছিল, অবশ্য সুবিমল এত সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারলেন না। একটু দেরিতে উঠে বারান্দায় এসে দুচোখ কচলে নিয়ে এদিক ওদিক বারদুই দেখে নিলেন। চা এল, চেয়ারে বসে খেতে শুরু করলেন, মনের মাটিতে একটাই ইচ্ছা গড়িয়ে গড়িয়ে চলেছে, থামাতে চাইলেও তা আরও গতিশীল হয়ে উঠছে। সুবিমল নিজেই দুলতে লাগলেন সেই অভিনব গতির সঙ্গে। রঘু কী পারবে এত বড়ো অসাধ্য সাধন করতে? নিজের কাছে প্রশ্নটা রাখলেন, নিজেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করলেন। শেষ পর্যন্ত ভাবলেন, কেবল রঘুই পারে এত বড়ো অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলতে। এ নিয়ে ভাবনার কী আছে? এক অদ্ভুত সাহসি ছেলে, ভগবান ওর বুকটা পাষাণ করে তৈরি করেছেন, এতটুকু হাত কাঁপে না।
চায়ের কাপ টেবিলে রেখে সামনে চোখ মেলে দেখলেন, সেই রঘু হনহনিয়ে তার বাড়ির ভিতরে ঢুকছে। রায়বাবুর সাদর সম্ভাষণ, আয়রে, এতক্ষণ তোর কথাই ভাবছিলাম।
আমিও আপনার ভাবনার মধ্যে ঢুকে পড়েছি?
খুব দুষ্টুমি করে কথা বলতে শিখেছিস রে।
রঘুর মুখে গালভরা হাসি, সুবিমল ভাবতে পারলেন যে প্লটের খুঁটিনাটি শোনার পরেও দুর্জয় সাহস নিয়ে ছেলেটা এখানে আসতে পেরেছে। রঘুর মুখে তিযর্ক হাসির ছটা তা প্রমাণ করছিল। সুবিমলের সগতোক্তি, চল্, ঘরের ভিতরে গিয়ে বসি, বুঝতে পারছি, এ্যাকশানে নামার জন্যে মনে মনে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিস।
রঘু আবার একটু হাসল, ঘরে ঢুকে সুবিমলের পাশেই বসল, কী বলবেন তা যেন তার জানা হয়ে গেছে। সুবিমলকে একেবারে নতুন মানুষ বলে মনে হল রঘুর।
হ্যাঁরে, কথা বলার সময় এভাবে জানালাগুলো খুলে রাখবি?
তাহলে বন্ধ করে দেব?
তোর কী মনে হয়?
বেদেয় চেনে সাপের হাঁচি, রঘুও বুঝল সুবিমলের প্রশ্নের পশ্চাৎভূমি, চটপট জানালাগুলো বন্ধ করে দিল। ফিরে এসে গম্ভীরমুখে বসল সুবিমলের পাশে।
আরেকটু কাছে এসে বস্।
এই তো বসেছি।
ভয় পাচ্ছিস না তো?
গুরু, ভয় থাকলে আমার জীবনের পথ অন্যরকম হয়ে যেত।
সুবিমল পরম নির্ভরতায় রঘুর বাম কাঁধে ডান হাতের তালু তুলে দিয়ে বললেন, কাজটা সেরে ফেললেই বুঝবি, কতটা হাল্কা হয়ে যেতে পেরেছিস।
রঘু আরও গম্ভীর হল, উঠে দাঁড়িয়ে বলল, এসব নিয়ে একদম ভাববেন না, কোনোদিন নিজের টার্গেটে ফেল করি নি।
রঘুর আত্মবিশ্বাস বজ্রপাতে ফেটে পড়ল, বিশেষ স্বস্তি অনুভব করলেন সুবিমল। কম কথা বললেও ছেলেটার ভিতরে যথেষ্ট দম রয়েছে। ঠিক সময়ে ঠিক কাজ সেরে ফেলার যোগ্যতা দেখাতে পারে, কুসুম কুমারি দেবী যথার্থই বলেছেন, আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড়ো হয়ে কাজে বড়ো হবে।
ঝড়ের তান্ডবে অন্যান্য বড়ো গাছ মাটিতে শুয়ে পড়লেও সুবিমল ব্যতিক্রমী মহীরূহ, হাজার ঝড়ঝঞ্ঝা উপেক্ষা করে এতদিন নিজেকে হিমালয়ের মতো মাথা উঁচু করে রাখতে পেরেছেন। ভিতরে হাজার আতঙ্ক থাকলেও তা ঢেকে রাখার শক্ত মানুষটির নাম সুবিমল রায়। সব দুর্ভাবনা দূরে সরিয়ে রেখে সকলের সামনে নিজেকে পরম পরিতৃপ্ত মানুষ হিসেবে মেলে ধরতে পারেন।
সন্ধেয় বহড়ু স্টেশনের পাশে কর্মীসভা, পাঁচটায় আপট্রেন, সুবিমল মনে করলেন, ওটা ধরতে পারলে ঠিক সময়ে পৌঁছে যাবেন। দুপুরে ভাত খাওয়ার শেষে আরেক ঝলক সন্ধের সভা নিয়ে ভেবে নিলেন। সুচরিতা সকালে এসে জানিয়ে গেছে, সামনে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও কর্মীসভায় যাবে, সময়মতো মথুরাপুর স্টেশনে চলে আসবে, তারপর একসঙ্গে। বহড়ু স্টেশনের অদূরে হেমন্ত মুখার্জির জন্মভিটে। জনশ্রুতি অনুসারে মহান গায়ক বহড়ু স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। ১৮৫৬ সালে নির্মিত বিদ্যালয়টি জেলার অন্যতম প্রাচীন প্রতিষ্ঠান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মের পরের বছর অর্থাৎ বয়সের নিরিখে বহড়ু উচ্চ বিদ্যালয় এক বছরের বেশি প্রাচীন। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় এখানে পড়াশোনা করেছেন, স্বনামধন্য নীলরতন সরকার, যাঁর নামে কলকাতায় নীলরতন হাসপাতাল নির্মিত হয়েছে, তিনিও ছাত্রজীবন কাটিয়েছেন শতাব্দী প্রাচীণ বহড়ু উচ্চ বিদ্যালয়ে। কর্মীসভার মূল আলোচ্য বিষয়, হেমন্তের স্মৃতিতে একটা স্মৃতিসৌধ গঠন করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি কমিটি গড়ে তোলা, কত তাড়াতাড়ি রূপায়ন করা সম্ভব, তা খতিয়ে দেখা। সুবিমল ভালো কবেই জানেন, স্মৃতির সেতুতে দাঁড়িয়ে মানুষকে নাড়া দিতে পারলে সংগঠন ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই নতুন করে ভাবতে বাধ্য হবে। সকলের অস্থিমজ্জায় যে ছায়া ভর করে আছে, তাতেই জোর দিয়ে বহড়ুর সংগঠনকে নতুন করে জাগিয়ে তুলতে হবে। সাহিত্য, সংস্কৃতি মনন চর্চার আড়ালে এ দেশে রাজনীতি বিস্তারের খেলা স্বাধীনতার আগে থেকেই চলে আসছে। শুধুমাত্র পুরনো মন্ত্রে সকলকে কাছে টেনে বলতে হবে, হেমন্তের স্মৃতি রক্ষার্থে তাঁরা সত্যি সত্যি কিছু করতে চান। প্রধান বক্তা সুবিমল নিজেই। বিছানায় শরীর মেলে দিয়ে ভাবছেন, কোন্ কোন্ যুক্তিগুলোকে শাণিত কবে তুলতে পারলেই হেমন্তকে চিরকালীন গায়ক হিসেবে সকলের কাছে তুলে ধরা সম্ভব। সভায় উপস্থিত বাকি সকলে তাঁর মতামতকে মূল্য দিতে নিশ্চয় সংক্ষিপ্ত কথা তুলে ধরবে। এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো। হেমন্তকে খাঁটি জীবনরসে তুলে ধরার জন্যে চলে যাওয়া মানুষদের অনেকেই সংগঠনে ফিরে আসতে বাধ্য হবে। সকলের প্রশংসিত স্তুতিতে নিজেকেও ভাসিয়ে তুলতে পারবেন।
হাতঘড়িতে বিকেল চারটে। সুবিমল তৎপর হয়ে উঠলেন। পাঁচটার ট্রেন ধরতে গেলে একটু আগেভাগে বের হওয়া প্রয়োজন। পথে পরিচিত লোকজনের সঙ্গে দেখা হলে দুচার কথা বলতে পারবেন। স্টেশনে পৌঁছে দেখলেন, সুচরিতা তখনও আসে নি। মেয়েটা কেন যে বারবার লেট করে, তা মাথায় ঢুকল না। সময় মতো আসার গুরুত্ব শিখতে পারলেই তবে সুচরির পক্ষে বাড়তি উন্নতি করা সম্ভব। এ নিয়ে যে তাকে আদৌ সাবধান করা হয় নি, তা নয়।
একটু দেরি হয়ে গেল সুবিমলদা, পিছন থেকে হন্তদন্ত পায়ে এগিয়ে আসতে আসতে সুচরির স্বগতোক্তি।
সুবিমল থম চোখে সুচরিকে একবার দেখে নিলেন।
রাগ করলেন আমার উপর? সুচরির মুখে এক চিলতে হাসি।
উপরে উঠতে গেলে সময়জ্ঞান খুব কাজে লাগে সুচরিতা।
সুচরি মনে মনে কেমন যেন তটস্ত হল। যে মেয়েটা এখনও নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পেল না, তাকেই উপরে উঠার কথা বলছেন সুবিমলবাবু? শুধু কথার কথা নয় তো?
আবার সুবিমলের মন্তব্য, সংগঠনে তোমার অবস্থান নিয়ে বেশ চিন্তায় রয়েছি।
ট্রেন ঢুকল মথুরাপুর স্টেশনে, আর কথা হল না। ধাক্কাধাক্কি করে ভিতরে ঢোকার এক বিরল মুহূর্ত। সুবিমল ট্রেনে উঠে স্থির পায়ে দাঁড়িয়ে, পাশে সুচরিতা। পরের স্টেশন জয়নগর, তারপরেই বহড়ু। সূর্য পশ্চিম আকাশে শেষ অস্তরাগ ছড়িয়ে দিতে ব্যস্ত। সুবিমল সুচরিকে সঙ্গে নিয়ে বহড়ু স্টেশনে নামলেন। হেঁটে মিনিট পাঁচেক, চারদিকে ঘেরা জায়গার মধ্যে আলোচনার আসর। ইতিমধ্যে বেশ কিছু কর্মী এসে উপস্থিত হয়েছেন। অভিমান মিশ্রিত গলায় সুচরির চাপা দাবি, আপনাকে আজ খুব ভালো বক্তব্য রাখতে হবে।
সুবিমল মৃদু হাসলেন, ভাবলেন, এটা শুধু দাবি নয়, ভিতরে রয়েছে তাঁর প্রতি আন্তরিক স্বীকৃতি। এ তল্লাটে সবাই জানে, একমাত্র তিনিই কথার যাদুকর, থাপ্পড় মেরে সাধারণ মানুষকে যখন তখন বশে আনতে পারেন। সেই যাদুমন্ত্র নিয়ে আমমানুষের এত কাছাকাছি আসতে পেরেছেন।
সভার শেষ বক্তা হিসেবে সুবিমল উঠে দাঁড়িয়ে খুব সহজে বুঝিয়ে দিলেন,বাঙালি জীবনে হেমন্তের গানের প্রভাব কত গভীর, স্মৃতিরক্ষা মঞ্চ তৈরি হলে স্থানীয় অনামী শিল্পীরা কীভাবে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারবে, অতীতের সঙ্গে বর্তমান যুক্ত হলে তাৎক্ষণিক অবস্থান দিন দিন কত বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে।
সকলে স্তম্ভিত হয়ে শুনল সুবিমলের বক্তব্য। রাজনীতিকে আড়াল করে শিল্প সাহিত্যের মোড়কে মূল উদ্দেশ্যকে এমনভাবে যুক্ত করে দিলেন যে প্রতেকে মুগ্ধ না হয়ে পারল না। সুচরিতা মনে করল যে এক অপরিচিত যাদুকরের সামনে দাঁড়িয়ে নানা অবিস্মরণীয় কথা শুনতে হচ্ছে তাকে। জীবনের আলোচনায় গভীরভাবে ঢুকে পড়ার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। বার বার মনে হল, সুবিমল রায়ের কাছে আরও অনেক কিছু শেখার আছে।
সভা শেষ হতেই আয়োজকদের পক্ষ থেকে মিষ্টিমুখ করার পর্ব শুরু হল। হাতে গোনা কয়েকজন সামনের সারির নেতৃত্ব। সুবিমল বলতে শুরু করলেন,সভার আলোচনাকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। অতীত স্মৃতিচারণ নতুন প্রজন্মকে কত বেশি প্রভাবিত করতে পারে, তা প্রমাণিত হবে তোমাদের প্রচারে। সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র গড়ে ওঠার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই কিন্তু মানুষ ভাবতে বাধ্য হবে, কাদের উদ্যোগে এত বড়ো সামাজিক চেতনা তৈরি হল। সেই সহানুভূতির ভিতরে রয়েছে মানুষকে নতুন করে কাছে পাবার প্রত্যাশা, রাজনীতির সরল সামাজিকীকরণ। হেমন্তের উপর আমাদের অনুরাগ হয়ে উঠবে সংগঠনে লোক টানার অপূর্ব ভাবনাস্রোত, অবশ্য কোনো কাজে আসবে না যদি না তোমরা এই থিমটাকে প্রচারের আলোয় আনতে না পারো।
প্রদীপ সন্ধের সময় খবর পেল, তাকে না জানিয়ে সুচরিতা জয়নগরে গিয়েছে কর্মীসভায় যোগ দিতে। ভিতরে চরম অসন্তুষ্টি জমলেও তা কাউকে বলতে পারল না বরং রাগের আগুনে পুড়তে পুড়তে মথুরাপুর প্লাটফর্মে এসে দেখল, সে ট্রেনটাইম মিস করেছে। সভার আলোচনা শেষ করে পরের ট্রেনে সুচরিতা ফিরতে পারে। মনে মনে ঠিক করল, সুচরিতাকে সঙ্গে না নিয়ে বাড়িতে ফিরবে না। ভালোবাসার যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ সবক শেখানোর জন্যে মনে মনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হল কিন্তু ফাঁকা স্টেশনে হ্যাংলার মতো দাঁড়িয়ে না থেকে প্লাটফর্মের উত্তর মাথায় চায়ের দোকানের ভিতরে ঢুকে বলল, চা দাও দাদা, ছোটো করে, সঙ্গে ক্রিমকেকার বিস্কুট দিও। সময় কাটানোর অজুহাত। পাশে বসে থাকা যুবকদের মধ্যে টুকরো মন্তেব্যের ছড়াছড়ি।
আজ দারুণ বক্তব্য রাখলেন সুবিমলদা।
উনি সব সময় এরকম বক্তব্য রাখেন।
জীবনরসের উপর এত ভালো বক্তব্য এ তল্লাটে কেউ রাখতে পারেন না।
দীর্ঘ অভিজ্ঞতা না থাকলে এভাবে বক্তব্য রাখা সম্ভব নয়।
গতবছর নেতাজীর জন্মদিনে এমনি জোরালো বক্তব্য শুনিয়েছিলেন। লোকটার ভিতরে যাদু আছে।
সুবিমলদা তো এ যুগের নেতাজী।
গরম চায়ে চুমুক দিয়ে প্রতাপের ফুটুনি, গুরুর সব ভালো, কচি মালটাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে দেখলে মাথাটা কেমন যেন বিগড়ে যায়।
তির যে সুচরির দিকে, তা প্রদীপ হাড়ে হাড়ে বুঝল, সকলে প্রতাপের মন্তব্যে মুখ টিপে হাসল কিন্তু কোনো মন্তব্য করল না। বেঞ্চের এক ধারে বসে যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ করে প্রদীপ মনে মনে ভাবতে বাধ্য হল যে, সুচরিতা তার মনের আকাশ থেকে অনেকখানি দূরে সরে গেছে। যা রটে তার কিছুটা ঘটে— এ প্রবাদবাক্য আছে বলেই এত সব কুমন্তব্য শুনতে হল তাকে। কলেজ স্পোর্টস-এর দুটো দিন সে যেভাবে সুচরিকে চ্যাম্পিয়ন করতে উৎসাহ যুগিয়েছিল তা কী ভুলে গেল মেয়েটা? রাজনীতিই তার কাছে একমাত্র সত্যি হয়ে উঠল? কেন যে সুবিমলকে বিশ্বাস করতে গেল? প্রশ্নের তিরে থমকে থাকল প্রদীপ।
হাত ঘড়িতে আটটা বেজে দশ মিনিট। পাঁচ মিনিট পরে ডাউন ট্রেন ঢুকবে। প্রদীপের ভিতরে সুচরিতা এত জোরে ভর করল যে কিছুতেই মনের অস্থিরতা ঝেড়ে ফেলতে পারল না। সময় পার হতে লাগল সামুদ্রিক জোয়ারের মতো। প্রদীপ প্লাটফর্মের উত্তর মাথায় দাঁড়িয়ে। এতক্ষণ ভিতরের অন্ধ গলিপথে সুচরিতার উপর যে জোর দেখাতে উদ্যত হয়েছিল, তা যেন হঠাৎ করে শিখিল হতে শুরু করল। মানসিক দুর্বলতার বৈচিত্র্য কী এমনিই? একবার ভাবল, সুচরিতা এমনিই একগুঁয়ে মেয়ে যে তার সঙ্গে কথা পর্যন্ত নাও বলতে পারে, তবুও দুচোখ ভরে দেখার সুযোগ তার কাছে রয়েছে। নেই মামার চেয়ে কানা মামার মতোই। প্রাপ্তির চরম অনিশ্চয়তা তাকে যে কতখানি ত্যাগী করে তুলেছে, তা বেশ অনুভব করতে পারল, সুচরিকে ছেড়ে পালানোর মানসিকতাকে প্রশ্রয় দিতে পারল না।
ট্রেন ঢুকল মথুরাপুর স্টেশনে, চকিত আবেগে অস্থির হল প্রদীপ।
এ্যাই, আস্তে নামো, সুচরিতার উদ্দেশ্যে সুবিমলের সাবধানি কথা। চমকে উঠল প্রদীপ। আরও দেখল, শুধু এভাবে সুচরিকে সাবধান করে দিল না, ডান বাহু ধরে প্লাটফর্মে নামতে সাহায্য করল। প্রদীপের শরীর চিড়বিড় করে উঠল। সুচরি বাদামি রঙের শাড়ি পরে আছে, ভারি সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে, কলেজ স্পোর্টসের সময় ওই শাড়িটাই পরে গিয়েছিল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হাতে নিয়ে প্রদীপকে প্রশ্ন করেছিল, পর পর দুদিন একই রঙের শাড়ি পরে এলাম কেন, জানতে ইচ্ছা করে না?
প্রদীপ দুচোখ স্থির করে সুচরির দিকে তাকিয়ে ছিল।
তুমি পছন্দ করো বলেই, তারপর একগাল হাসি। ভাবনায় মন ভরে গেল প্রদীপের। পিছন থেকে নাম ধরে ডাকতে খুব ইচ্ছা করল কিন্তু কিছুতেই সাহস পেল না। সুবিমল তার পাশে পাশে হাঁটছেন। সেই রায়বাবু যিনি সালিশিতে বসে অত্যন্ত কৌশল করে মালতিকে তার ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পেরেছেন। সেদিন রাতে তাকে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে হয়েছে। হৃদয়ের গভীরে কেমন যেন ধক ধক শব্দ হল। অনেক দিন মালতির কোনো খোঁজ খবর নিতে পারে নি। মেয়েটা কেমন আছে, তা জানার জন্যে উদগ্রিব হল প্রদীপ। বোধ হয় আর মাস দুই বাকি আছে, তারপর সে কুমারী মা হয়ে যাবে। ছেলেটা বড়ো হবে, মাকে দেখে হাসবে কিন্তু কাউকে বাবা বলে ডাকার সুযোগ পাবে না। প্রদীপের বার বার মনে হতে থাকল, ডি.এন.এ. টেস্টের প্রসঙ্গ উঠেছে যখন, শেষ পর্যন্ত সুবিমল কিছুতেই দায়ভার এড়িয়ে যেতে পারবেন না। সুবিমল যে মেয়েটার সবর্নাশ করেছে, সালিশি নাটকের পরে তা নিয়ে প্রদীপের মধ্যে আর কোনও সন্দেহ ছিল না। আরেকটা দুর্ভাবনা মাথার উপর ছাতা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ডি.এন.এ. টেস্টের কথা ভেবেই কী সুবিমল মালতির চরম সর্বনাশ করে দিতে পারে? ভদ্রলোকের পক্ষে সব কিছু করা সম্ভব। হাসিমুখে খারাপ কাজ করার অদ্ভুত যাদুকর। প্রদীপ কেমন যেন দোলাচলে। কেবলমাত্র চাকরির লোভে এতদিনের সম্পর্ক ভুলে সুচরিতা তাকে ভুলে যেতে পারল?
প্লাটফর্মের পাশে রিক্সাভ্যান স্ট্যান্ড। এক রিক্সাচালকের উদ্দেশ্যে সুবিমলের রাশভারি প্রশ্ন, হ্যাঁরে গোলক, যাবি নাকি?
সন্ধে থেকে হাপিত্তিস করে বসে আছি দাদা।
সুবিমল আর কথা বাড়ালেন না। গোলকের রিক্সায় উঠে বসলেন, সহানুভূতির ঝড় বইয়ে দিয়ে বললেন, যারা বাড়তি খরচের কথা ভেবে রিক্সায় উঠতে চাচ্ছে না, তাদের কথাও তোকে ভাবতে হবে।
তা কী করে সম্ভব?
রেট কমিয়ে দিলেই হল।
তাহলে সংসার চলবে কী করে?
বিকল্প পথ থাকলে এ নিয়ে এত ভাবতে হত না তোকে। আমার মনে আছে, গতমাসে দেখা হলে বলেছিলিস একটা লোন পেলে ছেলেটাকে কোনো কাজেকম্মে লাগিয়ে দিতে পারবি। তারপর দেখা করেছিস? যার কথা তার মনে নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই। সেই অবস্থানে চলে গেলি কেন রে? টানা এক মাস রিক্সাভ্যান স্ট্যান্ডে তোকে দেখি নি। রোজ ভেবেছি, দেখা হলে ছেলের কথা নতুন করে মনে করিয়ে দেব কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। আমি কিন্তু ভুলে যাইনি। তোর ছেলের নামে দরখাস্ত নিজেই দিয়েছি, তা মঞ্জুর হয়ে গেছে। কুড়ি হাজার তো? সামনের মাসের শুরুতে পেয়ে যাবি। দুচার দিনের মধ্যে ব্যাঙ্কে টাকা ঢুকে যাবে।
অন্যান্য রিক্সাভ্যান চালকরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছিল সুবিমলের পরোপকারের কথা। লোকটার মধ্যে কোনো অহংকার নেই বলেই এভাবে স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে মন খুলে কথা বলতে পারলেন। সেই ভাবনায় দুলল কেউ কেউ। আম-মানুষের সঙ্গে বন্ধুর মতো মেলামেশাও করতে পারেন। মূল্যায়নের এ পর্বও কারুর কারুর মধ্যে উঁকি দিল। এত কিছু পারেন বলেই পিছনে জনসমর্থনের ঢেউ রয়েছে। এ মূল্যায়নও ধরা পড়ল কয়েক জনের মধ্যে। সুচরিকে উদ্দেশ্য করে সুবিমল বললেন, তাড়াতাড়ি উঠে বসো।
ছোটো জায়গায় দুজনে সেঁটে বসল পাশাপাশি। প্রদীপ পান-দোকানের পিছনে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখল, সারা শরীরে কাঁটার জ্বালা, দুচোখে অন্ধকার। একটা জমাট বাঁধা সন্দেহ প্রদীপের হৃদয় সমুদ্রে উপছে পড়ছে। রিক্সা চলতে শুরু করল। প্রদীপ পাশের গ্যারেজ থেকে সাইকেল নিয়ে রিক্সার পিছনে পিছনে চলল। স্মৃতি কথায় বার বার ভারাক্রান্ত হচ্ছে সে। কলেজ জীবনের মধুর দিনগুলোর কথা কিছুতেই ভুলতে পারছে না।
রিক্সা থামল থানার সামনে। ব্যস্ত সুবিমল ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে বললেন, মিনিট পাঁচেকের জন্যে ভিতরে যেতে হবে সুচরি। অ্যাপোয়েন্টমেন্ট করাই আছে, দেরি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
প্রদীপের খুব ইচ্ছা করছিল সুচরির সঙ্গে দুকথা বলতে কিন্তু সুবিমল হঠাৎ এসে পড়তে পারেন ভেবেই সেই চেষ্টায় গেল না। সুবিমল শেষ পর্যন্ত সুচরিকে নিয়ে কী করতে চান, তা দেখার রহস্য জমে উঠল প্রদীপের মধ্যে।
পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ফিরে এলেন সুবিমল, তাঁর সহাস্য স্বগতোক্তি, এত রাতে তোমাকে একা ছেড়ে দিতে পারি না, চলো বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসি।
এসবের দরকার নেই সুবিমলদা, একা একা ঠিক যেতে পারব, মাত্র ক’মিনিটের রাস্তা তো।
আমাকে এভাবে দায়িত্বহীন ভাবছ? পনেরো মিনিটের রাস্তা, তোমাকে একা অন্ধকারে ছেড়ে দিতে পারি?
সুচরিতা আর না বলতে পারল না, হেঁটে চলল সুবিমলের পাশে পাশে। বাজার পার হয়ে অন্ধকারে পথ চলা শুরু হল দুজনের, পিছনে প্রদীপ। রাস্তার দুপাশে বনতুলসির গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, চলতি রাস্তার উপরে আঁধারের ঘনঘটা, কোথাও ছোপ ছোপ, কোথাও থিকথিকে। মিনিট পাঁচেক পরে সুবিমল সুচরিতার হাত ধরে হাঁটতে শুরু করলেন। পিছনে কিছুটা দূরত্ব রেখে প্রদীপ যে আসছে, তা জানতেই পারলেন না। সুচরিতর মধ্যে আড়ষ্টতার সমুদ্র কিন্তু নেতৃত্বের প্রতি অগাধ বিশ্বাসের কারণে তা বার বার ফিকে হয়ে যাচ্ছে। সভ্য শিক্ষিত মানুষের মধ্যে পাশবিকতা দেখা দিলে তা বুদ্ধি, মানবিকতা বা সামাজিক বোধকে কতখানি তলানিতে নামিয়ে দিতে পারে, সেই ভাবনায় দুলছে প্রদীপ। সুবিমল ভিতরে ভিতরে কাঁপতে শুরু করলেন, শারীরিক পশুটার ঝাঁকুনিতে কেমন যেন বেসামাল হয়ে পড়েছেন। থমকে দাঁড়িয়ে সুচরিকে দুহাতের বাহুতে জড়িয়ে নিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলেন, বুঝতে পারলেন, ভিতরের পশুটা কত বেশি মাংসাশী হাঙর হয়ে উঠেছে।
এসব কী করছেন সুবিমলদা? মৃদু প্রতিবাদ সুচরিতার কিন্তু সুবিমল তা কানেই নিলেন না। শরীরের কাঁপুনি আরও বেড়ে চলেছে, সুচরিতা ঝংকার দিয়ে উঠল, কী ভাবছেন আমাকে? শুধুমাত্র চাকরির লোভ দেখিয়ে….?
অন্ধকারে অদূরে দাঁড়ানো প্রদীপের বুকে সুচরির প্রতিবাদ বন্দুকের গুলির মতো বিঁধল। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারল না, অঝরে কাঁদতে শুরু করল। নিজের অধিকারে এত বড়ো আঘাত সে কোনোদিন দুচোখ ভরে দেখার সুযোগ পায়নি। সভ্যতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা সুবিমলের পশুবৃত্তির প্রতি তার আন্তরিক ঘৃণা ছড়িয়ে পড়তে লাগল অন্ধকারের কানায় কানায়।
আবার সুচরিতার ঝংকার, ছাড়ুন বলছি, কী মনে করেছেন আপনি? রাজনীতির নামে এ কী পাশবিকতা? থানায় জানাতে বাধ্য করবেন না। ঝরঝর করে কাঁদতে শুরু করল সুচরি। অপ্রস্তুত সুবিমলের শারীরিক উত্তেজনা কমতে শুরু করল, সুচরিকে ছেড়ে দিয়ে চুপপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেন। প্রদীপ গলাখাকারি দিয়ে নিজের উপস্থিতি জানিয়ে দিল। সুবিমল গলার স্বর উঁচু করে বললেন, কে, কে?
প্রদীপ পিছন থেকে দ্রুত সরে পড়ল। সুবিমলের মাথার উপর আতঙ্কের পাহাড় জমতে শুরু করল। কে গলা খাকারি দিল, সেই ভাবনায় ডুবে গেলেন। সুচরি প্রদীপ একযোগে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় যাবে নাতো? বাড়িতে ফিরে সারা রাত ঘুমোতে পারলেন না। ভোরে জোর করে ঘুমানোর চেষ্টা করলেন কিন্তু তাতেও সফল হলেন না। দুশ্চিন্তার বেড়াজাল বার বার ঘুমের আবেশকে কেড়ে নিতে থাকল। ভিতরের আতঙ্ক এত গভীর হয়ে উঠল যে বুকের ভিতরে টিপটিপ শব্দদোল শুরু হয়েছে। সুচরিতা থানায় অভিযোগ জানালে তা কতটা সূক্ষ্ম হয়ে উঠতে পারে, সেই ভাবনায় দুলতে লাগলেন। টানা দু’দশক সমগ্র এলাকা জুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন নিজের যোগ্যতা বলে। সুচরিতা কী তাতেই দাঁড়ি টেনে দিতে পারবে। সুবিমলের দুশ্চিন্তা দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে উঠল। রাজনীতির অঙ্ক কষে শেষ পর্যন্ত ভাবতে পারলেন যে এত প্রভাব প্রতিপত্তি উপেক্ষা করে সুচরির পক্ষে থানায় যাওয়া সম্ভব হবে না। ওয়েট এন্ড সি পলিসিতে আটকে থাকলেন ঘোড়েল রায়বাবু। ভোর রাতের শেষ প্রহরে সারা শরীর জুড়ে ক্লান্তির বোঝা, মাথায় ঘুরছে সুচরিতার বিরুদ্ধ প্রসঙ্গ,বাইরে কুহেলি পাখির ডাক, সুবিমলের শরীর আর গুরুভার নিতে পারছে না। ঘুমের অমাবস্যা তাঁর দুশ্চিন্তার বুকে ছেদ টেনে দিল।

চলবে…

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
লেখক: মুসা আলি
শিক্ষক জীবনের ৫৫ বছরে এসে সাহিত্যচর্চা শুরু। ইতিমধ্যে পঞ্চাশের বেশি উপন্যাসের মনসবদার। গল্প উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রে দীর্ঘ জীবন পরিক্রমায় কঠোর বিশ্বাসী। এখন বিদগ্ধ পাঠক শুধুমাত্র কাহিনি বা চরিত্র খোঁজেন না বরং তার ভিতরে লেখক এর নিজস্ব গভীর মনন আবিষ্কার করতে চান। ঔপন্যাসিক মুসা আলি দীর্ঘ জীবন পরিক্রমার জাদুতে তার নিজস্ব মনন দিয়ে বাঙালি পাঠককে ঋদ্ধ ও সমৃদ্ধ করে তুলতে বদ্ধপরিকর।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!