শাহজাদপুরে খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তুলতে গিয়ে গ্রামবাসীর সাথে প্রশাসনের সংঘর্ষ

শাহজাদপুর প্রতিনিধি
শাহজাদপুর প্রতিনিধি
4 মিনিটে পড়ুন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের বলদীপাড়া-হলদীঘর গ্রামের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সাথে স্থানীয় জনগণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান ও স্থানীয় নারী, শিশুসহ অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এসময় শতশত গ্রামবাসীর বাধার সম্মুখে প্রশাসন পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। রবিবার (২১ আগস্ট) বেলা ১১ টার দিকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত জায়গা ঐতিহ্যবাহী বলদিপাড়া-হলদিঘর খেলার মাঠে মাটি ভরাটের উদ্দেশ্যে প্রশাসন গেলে স্থানীয় জনগণের ব্যাপক বাধার সম্মুখীন হয়। মাঠ রক্ষায় গ্রামবাসী প্রবেশপথে গাছের গুড়ি ও বাঁশ দিয়ে বেরিগেড তৈরি করে। পরে বেরিকেড উপেক্ষা করে জোড় করে প্রশাসন প্রবেশ করতে চাইলে গ্রামবাসীর সাথে প্রশাসনের সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে শাহজাদপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হন। এসময় স্থানীয় পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ সুমাইয়া খাতুন (১০), মনিজা খাতুন (৩০), আলেয়া (৪০), ওজুফা খাতুন (৩৫), মরিয়ম বেগম (৫০) সহ অন্তত ৬ জন আহত হন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

সরজমিনে গেলে মোছা নাসরিন খাতুন, বিকেএসপির নিয়মিত খেলোয়াড় নয়ন তারা, রত্না খাতুন, জয়গন বেগম, আকবর মন্ডল, আব্দুল হাইসহ মাঠ রক্ষায় আন্দোলনকারীরা জানান, কয়েক পুরুষের শৈশব, কৈশোর, যৌবনের স্মৃতিমাখা প্রায় দুইশত বছরের ঐতিহ্যবাহী কয়েক গ্রামের একমাত্র খেলার মাঠটি রক্ষায় আশপাশের ছয়টি গ্রামের হাজারো নারী,পুরুষ, যুবক, বৃদ্ধা গত ১৪ জুলাই মানববন্ধন করে। মানববন্ধন থেকে প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়, ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠ রক্ষা করে অন্যত্র যেন সরকারি ঘর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু জনগণের যৌক্তিক দাবী অস্বীকার করে প্রশাসন জোর করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করতে আজ (২১ আগস্ট) মাটি ভরাটের উদ্দেশ্যে এসে নির্বিচারে নারী ও শিশুদের উপর আঘাত করে। পরে উপস্থিত জনতা রাস্তার বালু চোখেমুখে নিক্ষেপ করে প্রতিরোধের চেষ্টা করে তাদের।গ্রামবাসী আরও জানান, প্রশাসনের সাথে গাড়াদহ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ কিছু অস্ত্রধারীরাও আমাদের উপর হামলা চালায়। পরে প্রতিরোধে টিকতে না পেরে টিছু হটে তারা।

এদিকে ঘটনার পর থেকে বলদিপাড়া-হলদিঘর এলাকার ব্যাবসায়ীদের তালগাছি হাটে থাকা সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে এবং হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

2 শাহজাদপুরে খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তুলতে গিয়ে গ্রামবাসীর সাথে প্রশাসনের সংঘর্ষ
শাহজাদপুরে খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তুলতে গিয়ে গ্রামবাসীর সাথে প্রশাসনের সংঘর্ষ 35

অপরদিকে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দের আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য রবিবার সকালে আমি ও এ্যাসিল্যান্ড লিয়াকত সালমান কায়েমপুর ইউনিয়ন এর বলদিপাড়া হলদিঘর এ সরেজমিন পরিদর্শনে যাই। এসময় সেখানে এলাকার উশৃঙ্খল কিছু উঠতি বয়সী যুবক ও মহিলারা পথরোধ করে ও অশালীন আচরণ করে। একপর্যায়ে পেছন থেকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমার গাড়ী ভাংচুর করে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে এ্যাসিল্যান্ডের মাথা ফেটে যায়। দ্রুত এ্যাসিল্যান্ডকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়৷ পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

- বিজ্ঞাপন -

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ মাসুদ রানা সাংবাদিকদের জানান, শাহজাদপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান এর আঘাত বেশ গুরুতর তার মাথায় ৮ টি সেলাই দেয়া হয়েছে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহজাদপুরের বাইরে থাকায় এখনও কোন মামলা হয়নি।

ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।#

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!