সিদ্ধান্ত বদলে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আবারও রাস্তায় নেমেছেন সিলেট ভ্যালির চা শ্রমিকরা। ওসমানী বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন তারা।
জানা গেছে, রোববার (২১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নেন চা শ্রমিকরা। এতে ওই এলাকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণ যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
এর আগে শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে শ্রীমঙ্গলে শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেন চা-শ্রমিক নেতারা। পরে ১৪৫ টাকা মজুরি ধার্য হলে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল।
পরে বিকেলে এ সিদ্ধান্তের বিপরীতে চলে যান শ্রমিকরা। তাদের মধ্যে ১৪৫ টাকা মজুরি সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি দেখা দেয়। ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে দেখা দেয় বিভক্তি। পরে তাদের পক্ষ নিয়ে রাতেই নিজেদের ভোল পাল্টে ফেলেন নেতারা। ঘোষিত সিদ্ধান্ত বাদ দিয়ে নতুন করে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা।
রোববার সরেজমিনে আন্দোলন পর্যবেক্ষণে গিয়ে দেখা গেছে, খালি গায়ে রং দিয়ে ‘মজুরি ৩০০ টাকা চাই’, ‘প্রতারণার চুক্তি মানি না মানব না’, ‘এবারের সংগ্রাম চলবেই’ লিখে রাজপথে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। নগরের উপকণ্ঠ লাক্কাতুড়া চা বাগান সংলগ্ন এলাকার ওসমানী বিমানবন্দরের সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এ সময় প্রচণ্ড যানজট সৃষ্টি হয়। কিন্তু প্রশাসন তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ অবস্থায় আন্দোলনের ঘটনায় হস্তক্ষেপ করে সিলেট আওয়ামী লীগ। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী শ্রমিকদের মজুরির ব্যাপারে আশ্বাস দেন। পরে একদিনের আল্টিমেটাম দিয়ে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন চা-শ্রমিকরা।
চা শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সভাপতি রিতেশ মোদী বলেন, সাধারণ শ্রমিকরা সমঝোতা মানছেন না। তারা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে অনড়। তাই শনিবার মধ্যরাতে ভিডিও বার্তায় আন্দোলন অব্যহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান জানিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করিনি।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বাড়ানোর দাবিতে গত ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে ছিলেন চা শ্রমিকরা। এর আগে দুদিন দাবি আদায়ে তারা ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেছিলেন। কিন্তু, মালিক পক্ষ দাবি না মানায় অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।