নাটোরের বড়াইগ্রামে জীবন হোসেন (১১) নামের এক শিশুকে জ্বলন্ত সিগারেটের ছেঁকা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার মুদিদোকানি ইউনুস আলী শিশুটিকে মারধর ও সিগারেটের ছেঁকা দেন বলে অভিযোগ। শিশুটি স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাড়িতে আছে।
জীবন হোসেন উপজেলার মালয়েশিয়া প্রবাসী সুজন হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় সেন্ট লুইস উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিশুটির দাবি, গতকাল সকালে তার এক সহপাঠীকে সে লুকিয়ে ধূমপান করতে দেখে। ওই সহপাঠী তখন জীবনকে মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে দুপুরে তার বাবার মুদিদোকানে যেতে বলে। জীবন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সহপাঠীর বাবা ইউনুস আলীর মুদিদোকানে যায়। দোকানের ভেতরে বসার কিছুক্ষণের মধ্যেই ইউনুস আলী হঠাৎ তাকে চড়থাপ্পড় মারেন এবং জ্বলন্ত সিগারেট জীবনের ডান হাত চেপে ধরে ছেঁকা দেন। এ সময় জীবনের চিৎকারে আশপাশ থেকে লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন।
তাৎক্ষণিক জীবনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসক রাসেল হোসেন বলেন, শিশুটির ডান হাতে পোড়া জখম পাওয়া গেছে। পোড়ার ধরন দেখে এটা সিগারেটের ছেঁকা বলে মনে হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে চিকিৎসাবাবদ এক হাজার টাকা জরিমানা করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেন ইউপি চেয়ারম্যান।
গতকাল সন্ধ্যায় জীবনের মা জহুরা বেগম ছেলেকে নিয়ে ইউনুস আলীর দোকানে যান এবং এভাবে নির্যাতনের কারণ জানতে চান। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হলে জহুরা বেগম জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল কালামের শরণাপন্ন হন। আজ শনিবার সকালে চিকিৎসাবাবদ এক হাজার টাকা জরিমানা করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করেন ইউপি চেয়ারম্যান।
জহুরা বেগম বলেন, তাঁর স্বামী মালয়েশিয়া থাকেন। স্বামী বাড়িতে না থাকায় তিনি ছেলেকে নির্যাতনের বিষয় নিয়ে থানা-পুলিশ করতে চাননি। চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চেয়েছিলেন। চেয়ারম্যান মীমাংসা করে দিয়েছেন। আজ দুপুরে চেয়ারম্যান ও তাঁর ছেলে সোহেল রানা স্থানীয় সাংবাদিকদের বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি না করার অনুরোধ করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে মুদিদোকানি ইউনুছ আলী বলেন, দোকানের পাশে তাঁর ছেলের সঙ্গে জীবনের হাতাহাতি হচ্ছিল। তিনি তাদের ছাড়াতে গেলে অসাবধানতাবশত তাঁর হাতে থাকা সিগারেট জীবনের হাতে ঠেকে যায়। এতে তার হাত কিছুটা পুড়ে যায়। পরে তিনি চেয়ারম্যানের ছেলের মাধ্যমে এক হাজার টাকা জীবনকে দিয়ে মীমাংসা করে নিয়েছেন। তিনি জীবনকে ইচ্ছা করে সিগারেটের ছেঁকা দেননি বা মারপিট করেননি বলে দাবি করেন।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। তবে তিনি পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।