কবি: ভিস্টান হিউগ অডেন (ইংল্যান্ড)
অনুবাদ: সৌমিত্র চৌধুরী
বস্তুত নিরপেক্ষ অবস্থান ছিল তাঁর, বিশেষ দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে যখন এসেছিলেন,
ভূখণ্ডটিকে চোখেই দেখেননি কখনও অথচ ডেকে পাঠানো হল
দেশটিকে খণ্ড খণ্ড করে দেবেন তিনি।
দুই ধর্মান্ধ জনগোষ্ঠীর তুমুল মতভেদ,
ভিন্ন তাদের খাদ্য, ভিন্ন উপাস্য।
‘সময় অল্প,’ এই বলেই তাঁকে লন্ডনে বার্তা দেওয়া হয়েছিল।
হাতে সময় ছিল না পারস্পরিক পুনর্মিলন অথবা যুক্তিনিষ্ঠ বিতর্কের:
এখন একমাত্র সমাধান হল দেশটির বিভাজন।
ভাইসরয় মনে করেন, আপনি তার চিঠি পড়েও জানবেন,
তাঁর সাথে আপনার সাক্ষাৎ যত কম হয় ততই ভাল,
তাই আমরা আপনার বাসস্থানের সুব্যবস্থা করেছি।
চারজন বিচারক সঙ্গে দিতে পারি, দুইজন মুসলমান এবং দুইজন হিন্দু,
তাদের সাথে পরামর্শ চলতে পারে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বর্তাবে আপনার ওপরই।’
নির্জন প্রাসাদে নিঃশব্দে দিন কাটানো, রাতদিন পুলিশি পাহারা
ঘাতকদের দূরে রাখতে বাগানে টহল দেয়।
কাজে নেমে পড়লেন আপনি, লক্ষাধিক মানুষের ভাগ্য নির্ধারণের কাজ।
হাতে থাকা মানচিত্রগুলো ছিল অতি পুরনো
এবং আদমশুমারি রিপোর্ট একদমই ভুলে ভরা,
কিন্তু যাচাই করবার সময় ছিল না,
সংঘাতে দীর্ণ এলাকা গুলো যে পরিদর্শন করবেন, তার সময়ও অমিল,
আর আবহাওয়া ছিল ভয়ানক গরম,
এবং আপনার আমাশয় রোগ; ক্রমাগত কাজের ব্যাঘাত ঘটায়।
কিন্তু সাত সপ্তাহের মধ্যে কাজ সমাধা হয়ে গেল।
সীমান্ত নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হল,
ভাল বা খারাপ যাই হোক, এক বিশাল দেশ বিভাজিত হয়ে গেল।
পরদিনই ইংল্যান্ড যাত্রা করলেন, সেখানে পৌঁছে দ্রুত ভুলে গেলেন কেসটির কথা,
ভাল আইনজীবী যেমন করে থাকেন।
ফিরবেন না কোনও দিন, ভয় পেয়েছিলেন,
নিজের ক্লাবে বন্ধুদের বলেছিলেন, ‘তাকে গুলি করা হতে পারে।’