এক
আলোর দিকে তুমি, আমি অন্ধকারে
এই যে দূরত্ব ব্যবধান
জমিন আশমান ফারাক
অনতিক্রম্য দীর্ঘ পাঁচিল
চেয়ে চেয়ে দেখে গেছি…
সামর্থ্য ছিল না তাই
সংগোপন গুপ্তগুহা খোঁজা
দাবিপত্র পেশ নয়, ভিক্ষালব্ধ কর…
তোমার দয়ার দান ধরে আছে আজও!
দুই
ইস্পাতের মতো তীক্ষ্ণ ধারালো তোমার ঠোঁট
উষ্ণতার মধ্যে জিবের আহ্বান
আস্বাদিত চুম্বনের প্রগাঢ় আগুন…
স্মৃতি থেকে খুঁটে নিই এই সব
আতপ্ত বিকেল, মধ্যাহ্নের গাঢ় জ্বর
তোমার শরীর যেন জন্ম দেয়
আমার শরীর…
সেই প্রেম ফেলে রেখে ভুলভুলাইয়া মাঠে
পথহারা আমরা যেন অন্ধ বাউল…
তিন
আমি ডুবে যাচ্ছি। দীর্ঘ ঢেউ উত্তাল
অন্ধকূপে ডুবে আছি
তোমার মায়ার টান অতলস্পর্শ!
আমি ডুবে যাচ্ছি মুহূর্তে, মুহূর্ত থেকে উঠে
তোমার আলোময় চুলের বিস্তারে
সেখানেই লেখা আছে সমূহ বিস্ময়…
বিষাদ মাখানো আমাদের ভালবাসা
ডুবন্ত জলের থেকে পুনরায়
উঠে আসে অস্নাত সৌরভে…
চার
আমার ছায়ার মধ্যে তুমি ছিলে, না কায়া
খুঁজতে খুঁজতে দিন কেটে গেল;
আমার মা যেমন পুকুর ঘাটে
কাপড় কাচতে কাচতে
শিরদাঁড়া বাঁকাতে বাঁকাতে
একদিন নিজেই কাঁথা হয়ে গেল…
তোমার দুঃখের পাশে আমি নেই
তোমার ভালবাসার থেকে মুখ ফিরিয়ে
আমি আত্মমগ্ন অন্ধকারে নেমেছি…
আজ আমার কায়ার মধ্যে তোমার ছায়া
বড় স্পষ্ট, লাজুক আর অভিমানী!
পাঁচ
উষ্ণতায় ভরেছিল ঠোঁট
তোমার চুম্বনস্মৃতি
আজও শরীর কাঁপায়…
ধুলো মেখে ধুলো ঝেড়ে জীবন অস্থির
অক্সিজেন শেষ হল
ফুসফুস হাঁপাচ্ছে খুব
শীতঘুম নেমে আসবে চোখের পাতায়
তবু কিছুক্ষণ তোমার চুম্বণ নিয়ে উষ্ণ হতে চাই…
ছয়
এখানে গভীর ক্ষয়, এখানে পাতাঝরা বিকেল
জাদুবাক্স খুলে বসে আছে স্মৃতির অ্যালবাম…
ওখানে ব্যস্ত তুমি সাংসারিক কাজে
ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়ে বসে আছো;
মধ্যরাতে ঝড় ওঠে, বাতাসের উন্মত্ত প্রলাপ
ধুলো মেখে পাতা মেখে বিপর্যস্ত তুমি
দু’হাতে চেপে ধরো দরজার খিল…
আমি সেই বন্ধ দরজায় মাথাকুটে
ফিরে আসি রোজ…