টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঈগল এক্সপ্রেসের চলন্ত বাসে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি ও গণধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর ডাক্তারি পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। পরীক্ষায় হাইভ্যাজাইনাল সোয়াব টেস্ট নেগেটিভ এসেছে। অর্থাৎ, তার নমুনায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি।
ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা করেন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রেহেনা পারভীন। রবিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে তিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অধিকতর পরীক্ষার জন্য এখন বিভিন্ন আলামত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন থাকায় তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার ওই নারীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। পরীক্ষক দলের প্রধান ছিলেন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রেহেনা পারভীন। শনিবার বিকেলে হাইভেজাইনাল সোয়াপ টেস্টের ফলাফল পাওয়া যায়। পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি।
তবে বৃহস্পতিবারই ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ওই ডাকাতি ও গণধর্ষণের ঘটনায় নতুন কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
ইতিমধ্যে সব আসামিকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন ডাকাত সদস্য রাজা মিয়া (৩২), আউয়াল (৩০) এবং নুরনবী (২৬) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শনিবার রাতে দুই বিচারক তাদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চালক ও সহকারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া রাজা মিয়া আদালতে ওই নারীকে ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছে। তবে আব্দুল আউয়াল ও নুরনবী ডাকাতির কথা স্বীকার করলেও ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে।
গত ২ আগস্ট দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস অন্তত ২৪ জন যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জে জনতা নামে একটি হোটেলে খাবারের বিরতি দেওয়া হয়। সেখান থেকে সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রা করলে তিন দফায় ১০ ডাকাত সদস্য বাসটিতে ওঠে। অস্ত্রের মুখে ডাকাতরা পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
প্রথমে পুরুষ যাত্রীদের পোশাক খুলে হাত-মুখ বাঁধা হয়। আর বাসের পর্দা ও সিট কভার খুলে নারী যাত্রীদের মুখ ও হাত বেঁধে ফেলা হয়। এরপর অস্ত্রের মুখে বাসের চালক ও সহকারীকে জিম্মি করা হয়। এ সময় ডাকাতদলের সদস্য রাজা বাস চালায়। টাঙ্গাইলের গোড়াই এলাকা থেকে বাসটিকে ইউর্টান করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এরই মধ্যে যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা, কানের দুল, হাতের বালা, গলার চেইন লুট করা হয়। পরে ৫-৬ জন ডাকাত গাড়ির এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাস থামিয়ে পালিয়ে যায় তারা।