লজ্জাবতী
হে লজ্জাবতী, তোর কিসের এত লজ্জা,
মরদের সোহাগ পাসনি বটে,
তো কিসের সহসজ্জা।
হে লজ্জাবতী, তোর তো বেজায় সরম,
নরম শরীর, বেজায় গরম,
কালো রূপে আগুনের ঝলকা,
যেনো নিশি রাতের খোসে পড়া কোনো উল্কা।
হে লজ্জাবতী, তু কি শুধুই লাজুক বটে,
নাকি আছে তোর সাহস?
চল তালে পলাই দুজনে,
বুকে নিয়ে পিরিতির জোশ।
হে লজ্জাবতী, তু কথা কষনা কেনে?
তু কি বোবা? নাকি কালা?
এতো গুলো প্রশ্ন করি, কোনো উত্তরই দেয়না সালা?
আরে এ লজ্জাবতী, তুও কি নেশা করেছিস?
খেয়েছিস আমার মতো খেজুর রস?
এতো কথা বুলছি তখন থেকে, তু কোনো কথা না কষ।
ও মাগো এগিয়ে গিয়া দেখি, লজ্জাবতী কোথায়?
এত কাকতাড়ুয়া দাড়ায় আছে, জমির আলের উপর,
নেশার ঘোরে সব ভুল হয় রাতভর।
আঁধ ফালি চাঁদ
পূর্ণিমা রাতের আকাশে
ঝলমল করা চাঁদের ঝলক,
তোমার গলায় চেনা রবীন্দ্র সংগীত,
পষ্ট জোছনায়, ছাদের চিলেকোঠায়,
তোমায় দেখেছিলেম এক পলক।
যদিও পূর্ণিমার চাঁদ,
তোমার পছন্দ নয়
তুমি ভালবাসতে, আঁধ ফালি চাঁদ।
দিন গুনতে অমাবস্যার পরে,
কখন পূর্ব দক্ষিণ গগনে, রাতের আঁধারে,
দেখা দেবে এক ফালি চাঁদ।
তোমার রেশমের মত চুলের ঘটনাটায়,
চাঁদের আলো যেন, নদীর প্রতিফলন সৃষ্টি করতো।
সেই হালকা জোছনায়, তোমার অবাধ বিচরণ,
মিষ্টি মধুর সুরে আর পূর্ণিমার আলোয়,
স্নিগ্ধ পরিবেশ যেন মায়াবী সারাক্ষণ।
পেরিয়েছে বহু সময়, শেষ হয়েছে অনেক অধ্যায়।
তবুও…
আজও মধ্য গগনে ওঠে আঁধ ফালি চাঁদ,
হয়তো কারো চিলেকোঠার ঘরের সামনে,
কেউ গুনগুনিয়ে ওঠে চেনা অচেনা রবীন্দ্র সংগীত,
ব্যক্তিটা হয়তো অন্য কেউ,
সে হয়তো কারোর ব্যক্তিগত,
তোমারই মত, কিছুটা প্রকাশিত,
আর অনেকখানি অপ্রকাশিত।
আজও আমি আঁধারে, নিশুতি প্রহরে,
ক্যালেন্ডার এর প্রতিটি পাতায় দাগ দি,
আমাদের বিচ্ছেদের,
আমি তোমার মতই এখন দিন গুনি,
অমাবস্যার পরে আঁধ ফালি চাঁদের জন্যে,
সেই চিলেকোঠা ঘরে তোমায় খুঁজি,
এক পলক দেখার জন্য।
যেভাবে চলছে…
প্রতারণা করে, কেউ নিচ্ছে,
সবকিছু খইয়েও, কেউ দিচ্ছে।
ভর্তি পেটে কেউ খাচ্ছে,
প্রতিদিন অনাহারে কেউ তা দেখছে।
অহংকারে কেউ হাসছে,
সর্বস্বান্ত হয়ে কেউ কাঁদছে।
স্বল্পশিক্ষায় কেউ জ্ঞান দিচ্ছে,
অন্তরেতে জ্ঞানী, কেউ তা শুনছে।
জেনে শুনে কেউ, ভুল পথে চলছে,
পথ ভুলে কেউ সঠিক পথ খুঁজছে।
সত্যকে কেউ মিথ্যে বলছে,
মিথ্যে আশ্রয় কেউ সাম্রাজ্য গড়ছে।
গতানুগতিক ভাবে এভাবেই সব চলছে,
বারে বারে প্রতিবাদের আগুন নিভে যাচ্ছে।
প্রতিবাদী রাও হারিয়ে যাচ্ছে,
স্বার্থান্বেষী প্রভাব আর ধোঁয়াশার রাজ্যে।
বলা হয়নি
কখনো তোমাকে নিয়ে
কিছু লেখা হয়নি বলে,
তুমি প্রশ্ন করেছিলে?
আজ তোমাকে নিয়ে
লেখা হতভাগা কবিতা।
হয়তো ছন্দ বিহীন,
শব্দগুলো এলোমেলো,
বা কিছু কিছু তোমার,
হয়তো গায়ে বিধলো?
আমার সফলতা,
তোমার কাছে অস্বস্তিকর।
যতই লোক দেখানো,
আবেগপ্রবণ হও না কেন,
আমি বস্তু টাই অপ্রীতিকর।
রাগের মাথায় বেরিয়ে আসে
তোমার মনের সত্যি কথাগুলো,
একতরফা বিচারে তুমি শ্রেষ্ঠ
কোনদিনই আমাকে অপমানে
তোমার হৃদয় হয়নি কষ্ট।
মিথ্যে কিছু অপবাদ
কিছু সম্পর্কের জল্পনা
এগুলি তোমার সবই মনের ভুল
কিংবা নির্মাণ কল্পনা।
এভাবে ভাঙতে ভাঙতে,
হয়তো সম্পর্কটা ভেঙ্গে যাবে,
পড়ে থাকবে স্মৃতি, আমি হব ভব ঘুরে।
তুমি অন্য কারোর হবে।
তোমার প্রশ্নের কিছু উত্তর দিলাম,
যদি বোঝার ক্ষমতা থাকে,
তবে উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।
রিমঝিম স্মৃতি
আজ সারাদিন,
বহিছে শ্রাবণ
রিমঝিম রিমঝিম,
তোমার কি মনে…
ভেসে আসে স্মৃতি,
হারিয়ে যাওয়া দিন?
নাকি সব ভুলে গেছো,
স্মৃতিরা হয়েছে ক্ষীণ?
আগে জমা জলে,
দুজনে হেঁটেছি কত।
কাগজের নৌকা,
বানিয়েছি দুজনে,
সেই স্মৃতিরা অবিরত।
আজ যখন, নতুন যুগল
বৃষ্টি ভেজে, প্রেম খোঁজে,
ব্যাথা লাগে এ বুকেতে,
অতীতরা হাতড়ায়,
শুকনো হৃদয় জমিতে।
ভালোই ছিল সেই দিন
একসাথে পথ চলা,
রাজপথে হেঁটেছি দুজনে,
গুঞ্জন এ কথা বলা।
রিমঝিম এ শব্দ
হৃদয় বড়ই ক্লান্ত
ভালো থাকুক শুধুই স্মৃতি
অসন্তোষের হোক এখানেই ইতি।
পথের জীবন
আমার কোনো ঘর নেই, আমি যাযাবর,
আমার কোনো প্রেম নেই
আমি পরশ্রীকাতর।
জীবন টা আমার বেহিসাবী খাতা
সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে লেখা আছে,
আমার বেচেঁ থাকা বেদনার কথা।
হারিয়েছে প্রেম, হারিয়েছে মন
হারিয়েছি সংসার,
তবু হারায়নি স্বপ্নে দেখা প্রিয়জন।
নিঃস্ব এ জীবনে, স্বপ্নে আমি রাজা,
প্রতিরাতে স্বপ্নে সুখের চাঁদর বুনি,
স্বপ্ন শেষে পকেটে জমে থাকা…
খুচরো আদুলির টুং টাং শব্দ শুনি।
সত্যি! আমার কোনো ঘর নেই,
আমি যাযাবর, কখন কোথায় হারিয়ে যাবো,
নেই তার কোনো উত্তর।