বাংলাদেশে পেট্রোল, ডিজেলসহ সকল ধরণের জ্বালানি তেলের দাম ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বেড়ে হয়েছে ১১৪ টাকা। যা আগে ছিল প্রতি লিটারের দাম ৮০ টাকা। এছাড়াও অকটেন ও পেট্রোলের দাম যথাক্রমে ১৩৫ ও ১৩০ টাকা প্রতি লিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে ভোক্তা পর্যায়ে নতুন এই মূল্য কার্যকর হবে।
জ্বালানি বিভাগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈশ্বিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার কারণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), ইস্টার্ণ রিফাইনারী লিমিটেড (ই আর এল)-এ পরিশোধিত এবং আমদানি/ক্রয়কৃত ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের মূল্য সমন্বয় করে ভোক্তা পর্যায় নিম্নোক্তভাবে পুনঃনির্ধারণ করা হলো।
আজ শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টার পর থেকে ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের ভেতর ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ডিজেল ১১৪ টাকা লিটার, কেরোসিন ১১৪ টাকা লিটার, পেট্রোল ১৩০ টাকা লিটার ও অকটেন ১৩৫ টাকা লিটার হবে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর খবর জানার সাথে সাথে মধ্যরাতের আগেই তেল কিনতে রাজধানীর পেট্রোল স্টেশনগুলোর সামনে গাড়ি এবং মোটর বাইকের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির চিন্তা করে নাই। অবস্থার প্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনঃবিবেচনা করা হবে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ সহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত গত ২২ মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রল লিটার প্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে যা অদ্যাবধি বিদ্যমান রয়েছে। এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। (১ রুপি = গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবি।
বিগত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন জ্বালানি তেল বিক্রয়ে (সকল পণ্য) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে।