তাইওয়ানের চারদিকে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীনের সামরিক বাহিনী। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের জেরে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) শুরু করা এই মহড়ায় তাইওয়ান প্রণালীতে দূরপাল্লার একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে দেশটি।
চীনের সেনাবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের এই দৃশ্য দেখেছেন বার্তাসংস্থা এএফপির সাংবাদিকরা। এছাড়া বেইজিংয়ের সামরিক বাহিনীও ওই এলাকায় ‘দূরপাল্লার তাজা গোলাবারুদ ব্যবহার করে গুলিবর্ষণের’ কথা ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এএফপির সাংবাদিকরা তাইওয়ান প্রণালীর আশপাশের সামরিক স্থাপনা থেকে ছোঁড়া বেশ কয়েকটি ছোট ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে উড়তে এবং এরপরই সেগুলোকে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে দেখেছেন। স্থানীয় সময় দুপুর ১.১৩ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ১১টা ১৩ মিনিট) বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
চীনের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘পূর্ব তাইওয়ান প্রণালীর নির্দিষ্ট এলাকায় দূরপাল্লার তাজা গোলাবারুদ ব্যবহার করে গোলাবর্ষণ করেছে।’
চীনের সেনাবাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-এর ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘পূর্ব তাইওয়ান প্রণালীর নির্দিষ্ট এলাকায় নির্ভুল হামলা চালানো হয়েছে এবং প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করা হয়েছে।’
এএফপি বলছে, মার্কিন হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি দ্বীপটিতে সফরে যাওয়ার পর গুরুত্বপূর্ণ এই আন্তর্জাতিক রুটে শক্তি প্রদর্শনে চীন বর্তমানে তাইওয়ানকে ঘিরে তার সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া পরিচালনা করছে।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই সামরিক মহড়া চলবে আগামী রোববার পর্যন্ত। পুরো তাইওয়ানকে ঘিরে বেশ কয়েকটি পয়েন্টে এই মহড়া চালাচ্ছে চীন। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি পয়েন্ট আবার তাইওয়ানের তীরের মাত্র ২০ কিলোমিটারের (১২ মাইল) মধ্যে।
এর আগে চীনা সামরিক বাহিনী স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরে (বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায়) তাইওয়ানের আশেপাশের সাগরে লাইভ-ফায়ারসহ সামরিক মহড়া শুরু করেছে বলে জানায় চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধম সিসিটিভি।
নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তাইওয়ানের একটি মানচিত্র অন্তর্ভুক্ত করে সিসিটিভি বলেছে, ‘আজ দুপুর ১২ টা থেকে আগামী ৭ আগস্ট পর্যন্ত পিপলস লিবারেশন আর্মির একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মহড়া হচ্ছে।’
এদিকে তাইওয়ানের সামরিক বাহিনী বৃহস্পতিবার বলেছে, তাদের বাহিনী দ্বীপের আশপাশের জলসীমায় অভূতপূর্ব চীনা এই সামরিক মহড়া ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সংঘাতের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। যদিও সংঘাত হোক তারা তা চাইবে না।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যুদ্ধ না করে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার নীতি বজায় রাখবে এবং (চীনের সঙ্গে) বিরোধ না বাড়াতে ও বিরোধ সৃষ্টি না করার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যাবে।’