শিবের ভজন গেয়ে দেওবন্দের মুফতির কোপের মুখে পড়লেন উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরের ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ খ্যাত গায়িকা ফরমানি নাজ। গান গেয়ে বিভিন্ন মহলে জনপ্রিয়তা পেলেও গায়িকা ফরমানি নাজের বিরুদ্ধে ওঠেছে মুসলিম ধর্মকে আঘাত করার অভিযোগ।
সম্প্রতি তিনি ইউ টিউবে তাঁর গাওয়া একটি ভজন ‘হর হর শম্ভু’ পোস্ট করেন। এরপরেই মুসলিম ধর্মকে আঘাত করার অভিযোগ তোলেন দেওবন্দের উলামা মুফতি আসাদ কাসমি।
তিনি সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “গান এবং নাচ ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। শরিয়ত এর অনুমতি দেয় না। আল্লার কাছে এই তরুণীর অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
অপরদিকে আরেক উলামা মুফতি জুলফিকার বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী দেশের যেকোনও নাগরিক যেকোনও ধর্মের প্রশংসা করতেই পারেন। তবে বাকিদের ভাবাবেগে সেই প্রশংসা আঘাত দিচ্ছে কি না, তা খেয়াল রাখতে হবে। এনিয়ে কোনও সমস্যা নেই। যতক্ষণ না ভজনটি শুনছি, ততক্ষণ পর্যন্ত এনিয়ে বিবৃতি দেব না। তাই কিছুই বলছি না।”
জনপ্রিয় গায়িকা ফরমানি নাজের বিরুদ্ধে মুসলিম ধর্মকে আঘাত করার অভিযোগ উঠলেও দমে যেতে নারাজ তিনি। বরং সাধারণ মানুষকে ‘মনের দুয়ার খোলার’ বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “আমি একজন শিল্পী এবং শিল্পীর কোনও ধর্ম হয় না। কোনও গান গাওয়ার সময় আমরা ধর্মের বিষয়টি মাথায় রাখি না। সৃষ্টিকর্তা আমাকে কণ্ঠ দিয়েছে। আর সেই কণ্ঠ দিয়ে প্রতিটি মানুষের মন জয় করতে চাই আমি। আমি কাওয়ালীও গাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমি কোনও হুমকি পাইনি। তবে এই ভজন নিয়ে সামান্য বিতর্ক হয়েছে শুনেছি। তবে আমাদের বাড়িতে কেউ আসেনি।”
জানা গেছে, বিয়ের এক বছর পরেই পারিবারিক কলহ শুরু হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দ্বারা তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। এরমধ্যেই তিনি এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর থেকেই শিশুটি গলার অসুখে ভুগছিল। অসুস্থ সন্তানের অপারেশনের জন্য দরকার টাকা। সন্তানের চিকিৎসার জন্য তিনি ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ এ গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ইন্ডিয়ান আইডল (Indian Idol)-এর ১২ তম সিজনে অংশ নিয়েছিলেন ফরমানি। এরপরেই তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই গায়িকার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা প্রায় ৩.৮৪ মিলিয়ন।