ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় মিকোলাইভ শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রুশ এই হামলায় ইউক্রেনের সবচেয়ে ধনী এক ব্যবসায়ী এবং তার স্ত্রী নিহত হয়েছেন। ইউক্রেনের গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, ওলেক্সি ভাদাটুরস্কি এবং তার স্ত্রী রাইসা এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন।
গত শনিবার ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি তাদের বাড়িতে আঘাত হানে। ভাদাটুরস্কি ছিলেন নিবুলন নামের একটি কোম্পানির মালিক, যেটি ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি করতো।
মিকোলাইভ শহরে রুশ সামরিক বাহিনী খুবই ব্যাপক রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। শহরের মেয়র ওলেকসান্দার সেনকেয়েভিচ বলেছেন, পাঁচ মাস আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই শহরে সম্ভবত এটিই সবচেয়ে তীব্র রুশ আক্রমণ।
শনিবার রাতে একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরিত্যক্ত এক স্কুলের প্রাঙ্গনে আঘাত হানে এবং এরপর পাশের আবাসিক এলাকার একটি ভবনে আগুন ধরে যায়। দমকল কর্মীরা দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়। এছাড়া হামলায় একটি হোটেল, একটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স, দু’টি সার্ভিস স্টেশন এবং বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে।
শহরের মেয়র ওলেকসান্দার সেনকেয়েভিচ জানান, উদ্ধার কর্মীরা সেখানে এখন কাজ করছে। মিকোলাইভের অবস্থান মূলত ইউক্রেনের প্রধান সমুদ্রবন্দর ওডেসায় যাওয়ার পথে এবং সেজন্যে এই শহরের নিয়ন্ত্রণকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। রাশিয়া এর আগেও এখানে বার বার হামলা চালিয়েছিল।
এদিকে রাশিয়া তাদের অধিকৃত অঞ্চল ক্রিমিয়ায় রুশ নৌবাহিনী দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল করেছে। সেভাস্টাপোলের গভর্নর এজন্য কৃষ্ণসাগর এলাকার রুশ নৌবহরের সদর দপ্তরে ইউক্রেনের এক ড্রোন হামলার কথা উল্লেখ করেছেন। এই নৌবহরের ঘাঁটি বহুবছর ধরেই সেভাস্টাপোলে আছে।
তবে ইউক্রেনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা সেরহি ব্রাটচুক রাশিয়ার এই রিপোর্টকে ‘উস্কানি’ বলে বর্ণনা করেছেন। রাশিয়ায় ‘নৌবাহিনী দিবস’ সরকারি ছুটির দিন এবং রোববার রাশিয়া জুড়ে এই দিবস উদযাপন করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেন্ট পিটার্সবার্গের অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন।
এক টেলিগ্রাম পোস্টে সেভাস্টাপোলের গভর্নর জানিয়েছেন, ‘একটি অজানা বস্তু কৃষ্ণসাগর নৌবহরের সদর দপ্তরের আঙ্গিনায় উড়ে এসেছিল, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এটি ছিল একটি ড্রোন। তিনি বলেছেন, এই ড্রোন হামলায় ছয় জন আহত হয়, তবে কেউ মারা যায়নি।’
এরপর নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে নৌবাহিনী দিবসের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে তাদের অংশ বলে ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে তখন আন্তর্জাতিকভাবে ধিক্কার উঠেছিল এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।