নাটোরের বাগাতিপাড়ায় শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থী শ্রাবনী’কে (ছদ্ম নাম) যৌন নীপিড়নের অভিযোগ উঠেছে ৩৫ বছর বয়সী শাদু‘র বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিশু শিক্ষার্থীর মা বাদি হয়ে স্থানীয় থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। শুক্রবার (২৯ জুলাই) উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়পুকুরিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এজাহার ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, শুক্রবার স্কুল বন্ধ থাকায় শ্রাবনী (ছদ্ম নাম) বাড়ির বাহিরে তার সমবয়সী চাচাত বোন কুশুম (ছদ্ম নাম) এর সাথে পাশেই তাদের ফুপুর বাড়ির কাছে খেলা করতে যায়। সেখান থেকে ফেরার সময় একই গ্রামের মৃত সোবাহান মণ্ডলের ছেলে-
মো. শাহাদত হোসেন ওরফে শাদু (৩৫) ছদ্ম নামের শিশু শ্রাবনীর হাত ধরে জোর করে টেনে হিচরে তার দোকান ঘরে ভিতরে নিয়ে গিয়ে শিশুটির স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এ সময় ভিকটিমের সাথে থাকা সমবয়ষী চাচাতো বোনকে, এই ঘটনা কাউকে না জানাতে হুশিয়ারি দিয়ে নানাবিধ ভয় ভীতি দেখায় এবং জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অভিযুক্ত।
শিশুরা এতে ভীত হলে তাদেরকে চকলেট খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করে শাদু। সে সময় ভুক্তভোগি শিশুর ফুপু দোকানে গেলে তার কথা শুনতে পেয়ে শিশুদের ছেড়ে দেয় শাদু। পরে শিশুরা বাড়িতে না গিয়ে, ফুপুর সাথে ফুপুর বাড়িতে গিয়ে তার ১২ বছরের আর এক চাচাতো বোনকে ঘটনাটি বলে।
ভিকটিমের মা বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেয়ে সাহাদত হোসেন ওরফে শাদু‘র কাছে জানতে চাইলে সে আমার উপর চড়াও হয়ে বাজে ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। পরে আমি বাগাতিপাড়া মডেল থানায় গিয়ে শাদু‘র বিরুদ্ধে শিশুকে যৌন নীপিড়নের অভিযোগ এনে একটি লিখিত এজাহার দাখিল করি।
ইতিপুর্বেও শাদু তার শিশু কন্যার সাথে এমন আচরন করেছে। শুধু তাইনা আমাকে বিভিন্ন সময় কূটুকথা বলাসহ অনৈতিক কুপ্রস্তাব দিয়ে আসতো। মেয়ের বাবা চাকরির সুবাদে বগুড়া জেলায় থাকেন। এই মেয়ে ও ৩ বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করি। আর সেই সুযোগে সাদু এমন আচরন করে আদের সাথে।’
নাম প্রকাশ না করার স্বর্তে শিশুটির বড় চাচা জানান, ‘আমরা একই এলাকার বাসিন্দা, সাহাদত ইতিপূর্বেও এধরনের কার্যকলাপ করে আসছে কিন্তু আমরা গরিব অসহায়, অপরদিকে তার বংশ বড় ও তারা ক্ষমতাবান কিছু বলতে গেলে আমাদের হুমকি দেয়, এই বিষয়টি নিয়ে মামলা করার কারনে আজ ভিকটিমসহ বাদিকে বড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
শুধু তাই না শাহাদতের এক ভাগিনা এসে বলে তোদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেবো। অপর দিক থেকে এক ভাতিজা এসে বলে বাড়িঘর ভেঙে দেয়া হবে, ‘তোদের বসবাস করতে দেবো না।’ এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের হুমকি সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের।’
এ বিষয়ে মুঠোফোনে শাদু বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মেয়েটি আমার দোকেন সামনে খেলার সময় পড়ে গিয়েছিল, আমি তাকে তুলে ওর শরীরের মাটি ঝেরে দেই। করোনার সময় ভিকটিমের বাবা করোনা আক্রান্ত হয়ে দোকানে গিয়েছিল। তাকে বকা দিয়েছিল সাদু। সে সময় আমাদের মধ্যে বড় রকমের ঝগড়া বিবাদ হয়েছিল। তারই প্রতিশোধ নিতে এমন মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে আমার বিরুদ্ধে।’
শিশু যৌন নিপীড়ন’এর অভিযোগে একটি এজাহারের কথা শিকার করে বাগাতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এজাহারের প্রেক্ষিতে আইনিপদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। অভিযুক্ত ঘটনার পর থেকেই পলাতক থাকায় তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। অভিযুক্তকে আটকের জন্য চেষ্টা করছে পুলিশ।