খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির মতো জরুরি পণ্য কিনতে শ্রীলঙ্কাকে ১৬ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সেই সঙ্গে নতুন ঋণের প্রস্তাবও দিয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ঋণদাতা সংস্থা।
তবে সেই ঋণ কেবল তখনই পাওয়া যাবে, যখন দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্র নিজেদের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে ব্যাপক ও গভীর সংস্কার আনার উদ্যোগ নেবে।
শুক্রবার এক বিশ্বব্যাংক থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এসব তথ্য। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শ্রীলঙ্কাকে জরুরি পণ্য কিনতে আর্থিক সহায়তা বাবদ ১৬ কোটি ডলার শিগগিরই পাঠানো হবে। সেই সঙ্গে দেশটিকে নতুন ঋণ দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে বিশ্বব্যাংকের।’
‘কিন্তু এজন্য শ্রীলঙ্কাকে প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে, তা হলো দেশের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে গভীর ও ব্যাপক সংস্কার। বিশেষ করে যেসব কারণে বর্তমানের এই সংকট দেখা দিয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে মুলোৎপাটন করা। শ্রীলঙ্কা যদি এ শর্ত না মানে, তাহলে বিশ্বব্যাংক থেকে দেশটিকে কোনো ঋণ দেওয়া হবে না।’
১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বলতে বর্তমানে প্রায় কিছুই নেই। এ কারণে বিদেশ থেকে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির মতো জরুরি পণ্যও আমাদানি করতে পারছে না দেশটি।
শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসে ভাইদের নেতৃত্বাধীন সরকারের অব্যাবস্থাপনা, অযৌক্তিক কর কাটছাঁট, করোনা মহামারির কারণে পর্যটন ব্যবসায় ধস ও ভবিষ্যৎ পরিণতির কথা না ভেবে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যায়ই দেশটির বর্তমান দুরবস্থার প্রধান কারণ।
বর্তমানে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও বিভিন্ন দেশের কাছে শ্রীলঙ্কার দেনা রয়েছে ৫১০ কোটি ডলার। তবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে যাওয়ায় চলতি মাসের শুরুতে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছেন শ্রীলঙ্কার বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।
বর্তমানে এই অচলাবস্থা কাটাতে জরুরি ঋণের জন্য বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে সংলাপ করছে শ্রীলঙ্কা। তবে এই সংলাপ শেষ হতে আরও দুই থেকে তিন মাস লেগে যেতে পারে।
সূত্র: জিইও নিউজ