বাঘপ্রেমীদের আশার আলো দেখাচ্ছে সুন্দরবন। সুন্দরবনে এবার বাঘ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন-পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) তিনি বলেন, “বাঘ সুরক্ষায় সুন্দরবন বন বিভাগের উদ্যোগে সচেতনতামূলক কার্যক্রম হিসেবে প্রতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রবেশ বন্ধ থাকে। ফলে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি অনেক ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “করোনাভাইরাস মহামারি থেকে এখন পর্যন্ত কয়েকবার সুন্দরবনের বিভিন্ন জায়গায় বাঘ ও বাঘের বাচ্চা দেখেছেন বনরক্ষী, স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীরা। এসব কারণে আমরা মনে করছি সুন্দরবনে এবার বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।”
বন বিভাগ দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সুন্দরবনে টহল জোরদার করা হয়েছে। ফলে সুন্দরবনে চোরাশিকারিদের তৎপরতা কমেছে। সর্বশেষ করোনাভাইরাস মহামারিতে দেওয়া দীর্ঘদিনের লকডাউনে সুন্দরবনে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ ছিল। তখন সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি নিজেদের মতো করে বেড়ে উঠেছে। এ সময়ে বাঘেরাও তাদের ইচ্ছেমতও বনে বিচরণ করেছে। তখন কয়েকবার মুকন্দগাঁত বনরক্ষীরা বাঘ দেখেছেন।”
সুন্দরবন-পূর্ব বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপে বাঘ ছিল মাত্র ১১৪টি। এবার আবার গণনা শুরু হয়েছে।
এদিকে, ২০০১ থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সুন্দরবনের অন্তত ৪৬টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে আটটি বাঘের, বিভিন্ন সময় দুষ্কৃতকারীদের হাতে ১৩টি, লোকালয়ে আসায় জনগণের পিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে পাঁচটি বাঘের। ২০০৯ সালে ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিডরে মৃত্যু হয়েছে আরও একটি বাঘের।
এছাড়া বিভিন্ন সময় চোরাশিকারিদের মেরে ফেলা ১৯টি বাঘের চামড়া উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। বন বিভাগের হিসাব অনুযায়ী- সর্বশেষ জরিপের পরে অন্তত আটটি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, কতোগুলো বাঘের জন্ম হয়েছে, সে তথ্য নেই বন বিভাগের কাছে। সে হিসাবে, বর্তমানে সুন্দরবনে ১০৬টি বাঘ রয়েছে। তারপরও বন বিভাগ, বাঘ সংরক্ষণ ও সুন্দরবন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বাঘ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বছর ১২ মার্চ সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের ছিটা ককটা খালে একসঙ্গে চারটি বাঘের দেখা পেয়েছিলেন পর্যটকেরা। এর আগে ককটা খালে একসঙ্গে তিনটি বাঘ দেখা গিয়েছিল।