রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চলমান ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সির দায়ে পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে এক রাবি শিক্ষার্থী, দুজন ঢাবি শিক্ষার্থী, খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজের এক প্রভাষক ও একজন ভর্তি পরীক্ষার্থী রয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) ‘‘এ’’ ইউনিটের পরীক্ষার সময় বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তাদের সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রক্সি দেওয়ার কথা স্বীকার করলে কেন্দ্রে নিয়োজিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ তাদের কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী এখলাছুর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মেহজাবিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী বায়জিদ খান, খুলনার গাজী মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রভাষক ডা. সমের রায় এবং রাবি ভর্তিচ্ছু এস এম রাহাত আমীন।
এ ঘটনায় জান্নাতুল মেহজাবিনকে দুই বছর, এখলাছুর রহমান, বায়জিদ খান ও ডা. সমের রায়কে ১ বছর এবং ডা. সমেরকে নিজের পরীক্ষার আসনে বসানো শিক্ষার্থী এস এম রাহাত আমীনকে ক্যাম্পাসে পাওয়ার পর আটক করে তাকে ১ বছরের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রাবি জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, দণ্ডপ্রাপ্ত এখলাছুর রহমান ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনে রোল ১৭২২৮-এর পরীক্ষার্থী লিমনের হয়ে, জান্নাতুল মেহজাবিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে রোল ৬২৮২৮-এর পরীক্ষার্থী মোছা. ইশরাত জাহানের হয়ে, বায়জিদ খান সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনে রোল ৩৯৫৩৪-এর পরীক্ষার্থী তানভির আহমেদ হয়ে এবং ডা. সমীর রায় শেখ রাসেল মডেল স্কুলে রোল ৮৪৬৪৮-এর পরীক্ষার্থী এস এম রাহাত আমীনের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
এদের মধ্যে এখলাছুর রহমানের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কুয়াতপুর গ্রামে, বায়জিদের বাড়ি টাঙ্গাইলের মধুপুরে, জান্নাতুল মেহজাবিনের পঞ্চগড়ে, ডা. সমের রায়ের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এবং এস এম রাহাত আমীনের বাড়ি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নওয়াগ্রামে।
এ বিষয়ে রাবি প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘‘এ’’ ইউনিটের পরীক্ষার সময় সন্দেহভাজন এই পাঁচজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সবাই ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে। ফলে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় কোনো ধরনের জালিয়াতি কিংবা অনৈতিক কাজ করার সুযোগ নেই। এসব দেখভাল করার জন্য সার্বক্ষণিক তদারকি জারি রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা টিম ও শিক্ষকরা। তাই ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে পার পাওয়া যাবে না। এসব কাজে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।