রাজশাহীতে বাসায় একা পেয়ে এক শিশুকে গণধর্ষণের পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার অভিযোগে প্রতিবেশী দুই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজশাহীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেছেন।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে প্রতিবেশী দুই যুবককে আসামি করে এ মামলা করা হয়। আসামিরা হলো- পবা উপজেলার বালিয়া এলাকার বাসিন্দা রকি (২৫) এবং একই এলাকার শামীম (২৩)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গণধর্ষণ ও হত্যার শিকার হওয়া শিশুটি স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ঈদ-উল-আজহার আগের দিন (৯ জুলাই) দুপুরে শিশুকে বাসায় একা পেয়ে ধর্ষণ করে প্রতিবেশী দুই যুবক। পরে হত্যা করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘরের ছাউনির সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালায় ওই দুই যুবক।
শিশুটির বাবা জানান, ঈদের আগের দিন দুপুর ১টার দিকে স্ত্রী ও কোলের শিশুসন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে মুরগি দিতে যান। ওই দিন তার ১১ বছরের শিশুটি বাড়িতে একাই ছিল। অটোরিকশাচালক বাবা স্ত্রী-সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে নামিয়ে দিয়ে ভাড়া মারতে শুরু করেন। বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে আসামিদের একজন মেয়ের বাবার কাছে জানতে চায় তিনি এখন বাসায় এখন আসবেন কি-না? তিনি না বলার পরপরই ফোন কেটে দেয়। এর আধা ঘণ্টা পর শিশুটির বাবা বাসায় ফিরে মেয়েকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখেন।
সে সময় মেয়ের পা মাটিতেই ছিল। দ্রুতই ফাঁস খোলেন বাবা। এ সময় জোরে একটা শ্বাস নেয় শিশুটি। দ্রুত মেয়েকে নিজের অটোরিকশায় তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্ত শেষে ১০ জুলাই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শিশুটির বাবা বলেন, “হাসপাতালে চিকিৎসক আমার কাছে ঘটনার কারণ জানতে চেয়েছিলেন। আমি তাৎক্ষণিক বলেছি, ‘গলায় ফাঁস দিয়েছে।’ সেভাবেই মৃত্যুর সনদ হয়েছে। তাই থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে পুলিশ।” কিন্তু মেয়ের আত্মহত্যার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছিলেন না বাবা-মা।
“সেদিনের সব ঘটনা বিশ্লেষণ করে এবং মরদেহের ওপর আঘাত দেখে আমরা ধারণা করছি, মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি।” বলেন শিশুটির বাবা।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ। তিনি বলেন, “শিশুটির পরিবার ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেছে। বিষয়টি তদন্ত করছি আমরা। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।”