কিছু দিন আগে এক পরিবারের পোষা একটি আফ্রিকান তোতাপাখি উড়ে যায়। তার নাম— রুস্তম। তাদের পরিবারে এ রকম ২টি আফ্রিকান তোতাপাখি ছিল। সে ২টি তোতাপাখিই তাদের বড় প্রিয়। তা ছাড়া বনদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী কোনও পশুপাখি বুঝতে হলে একজোড়া পুষতে হবে। একটি মেল একটি ফিমেল। এই দুটি তোতাপাখিই ছিল ওই পরিবারের সদস্যের মতো। তাদের জন্মদিনও পালিত হত খুব ঘটা করে। পরিবারটি ওই এলাকায় পশুপ্রেমি হিসাবেই পরিচিত।
তাদের বাড়ি থেকে রুস্তম আচমকা উড়ে যাওয়ার পরে আশপাশের গোটা এলাকাটি তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তার হদিশ মেলেনি। অবশেষে পরিবারের তরফে জানানো হয়, আফ্রিকান ওই তোতাপাখিটির বেশি দূর উড়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই। ফলে সে নিশ্চয়ই কাছেপিঠেই কোথাও আছে।
তাই তাঁরা ঘোষণা করেন, যিনি ওই তোতাপাখিটিকে খুঁজে এনে দিতে পারবেন তাঁকে তারা ৫০ হাজার টাকা নগদ পুরস্কার দেবে। তাও আনার সঙ্গে সঙ্গে, একেবারে হাতে হাতে। এই মর্মে পোস্টার ছাপিয়ে লাগিয়ে দেন বাসস্টপ, রেলস্টেশন এবং বিভিন্ন বাড়ির দেয়ালে। মাইক নিয়েও চলে প্রচার।
এ দিকে ওই বাড়ি থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে এক ব্যক্তি পর দিন রুস্তমকে দেখতে পান। কিন্তু সেটা যে ওই হারানো তোতাপাখি, তিনি তা জানতেন না। শুধুমাত্র সুন্দর একটি তোতাপাখিকে ওই ভাবে বসে থাকতে দেখে তিনি তাকে ধরে নিয়ে আসেন বাড়িতে। পাখিটি তখন অত্যন্ত দুর্বল ও ভীত সন্ত্রস্ত ছিল। তাকে ভাল করে খাইয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। পরে তিনি জানতে পারেন, একজনের তোতাপাখি উড়ে গেছে। ফিরিয়ে দিতে পারলে মোটা অঙ্কের পুরস্কারও দেবে। কিন্তু এই তোতাপাখিটিই সেই তোতাপাখিটি কি না, না জেনেই ওই ব্যক্তি তখন তোতাটিকে নিয়ে হাজির হন ওই পরিবারে। পরিবারের লোকজন তাকে দেখেই চিনতে পারেন। রুস্তমকে ফিরে পেয়ে কার্যত আত্মহারা হয়ে পড়েন তার মালিক অর্জুন। যদিও খুঁজে দিলে ৫০ হাজার টাকা নগদ পুরস্কার দেওয়া হবে ঘোষণা করলেও, তোতাপাখিটির মালিক তার পোষ্যকে পেয়ে খুশিতে এতটাই বিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন যে ঘোষিত পঞ্চাশ হাজার টাকার সঙ্গে আরও ৩৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে মোট ৮৫ হাজার টাকা তুলে দেন ওই ব্যক্তির হাতে। এটা কর্ণাটকের টুমকুরের ঘটনা।