রাজধানীর সদরঘাট থেকে মিরপুর চিড়িয়াখানা গিয়েছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। সারা দিন কাজ শেষে তানজিল পরিবহনের একটি বাসে করে ফিরছিলেন সদরঘাটে। জানালার পাশে বসে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময় হঠাৎ এক ছিনতাইকারী তার মুঠোফোনটি টান দিয়ে দেন দৌড়।
তখনই বাস থেকে নেমে ওই ছাত্রী ছিনতাইকারীকে ধাওয়া করেন তিনি। কিন্তু ধরতে পারেননি। মুঠোফোনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হারিয়ে কারওয়ান বাজারের ইত্তেফাকের গলিতে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন। ওই সময় তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক নারীর ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালাচ্ছিলেন এক ছিনতাইকারী। তখন ওই ছিনতাইকারীকে ধরতে পেছনে ছুটছিলেন ওই নারী। তখন দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকারী ওই ছিনতাইকারীকে জাপটে ধরেন ক্ষুব্ধ ওই শিক্ষার্থী।
নিজের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া ছিনতাইকারীকে ধরতে না পারলেও আরেক ছিনতাইকারীকে ধরে বেধড়ক মারধরও করেন তিনি। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে জড়ো হন অনেক মানুষ। প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ছিনতাইকারীকে ধরার পর তার পকেট তল্লাশি করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী। এ সময় তার পকেট থেকে একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। তবে সেটি তার নয়। পরে কৌশলে ছিনতাইকারীকে দিয়ে ফোন করে তার সহযোগীকেও ডেকে আনা হয়। পরে তাকেও ধরে পেটানো হয়। তবে তার কাছেও ছিল না ছাত্রীর মুঠোফোন।
এরপর ছিনতাইকারী তুষার ও তার সহযোগী রাসেলকে তেজগাঁও থানা-পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় পুলিশ ওই ছাত্রী ও তার সঙ্গে থাকা বন্ধুকেও থানায় নিয়ে যায়। তবে তারা কোনো অভিযোগ না করে থানা থেকে ফিরে আসেন।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান বলেন, “ওই শিক্ষার্থীকে বাদী হয়ে মামলা করতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি রাজি হননি। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
শিক্ষার্থীর ছিনতাই হওয়া মুঠোফোন উদ্ধার হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ছিনতাই হওয়া মুঠোফোন উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।”
এদিকে ছিনতাইকারীকে মারধরের ঘটনার ভিডিও করেন ঘটনাস্থলে জড়ো হওয়া কয়েকজন। ভিডিওতে ওই শিক্ষার্থীকে পুলিশের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। তাকে বলতে শোনা যায়, “দুজন ছিনতাইকারীকে ধরাইয়া দিলাম। এরপরও পুলিশ যদি আমার মোবাইল উদ্ধার করে দিতে না পারে, এর চেয়ে বড় ব্যর্থতা আর কিছু নাই।”