রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা ও নিপীড়নের বিচার হবে, এজন্য দায়ী ব্যক্তিদের দায়বদ্ধতার আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে মনে করেন বর্তমান ও সাবেক কূটনীতিকরা। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলাগুলোয় এর ফল পাওয়া যাবে। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে চলমান মামলায় মিয়ানমারের আপত্তি খারিজ হবে বলে আশা করেন তারা।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে গাম্বিয়া। মামলা করার অধিকার নিয়ে আপত্তি উত্থাপন করে মিয়ানমার। গাম্বিয়ার মামলা নিয়ে মিয়ানমারের আপত্তির বিষয়ে আজ শুক্রবার (২২ জুলাই) সিদ্ধান্ত জানাবেন দ্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ঢলের সময়ে মানবিকতার পক্ষে এবং মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, ‘ওই সময়ে আমরা যখন এই মামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম তখন হাতেগোনা কয়েকজন বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক আদালতে এ ধরনের মামলা করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। তখন সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এবং দুই বছর পরিশ্রমের পরে ২০১৯-এর ডিসেম্বরে ওআইসির মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে গাম্বিয়া মামলা করে।
ওই মামলার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে শহীদুল হক বলেন, এর ফলে বাংলাদেশের জন্য কূটনীতির নতুন একটি জানালা উন্মুক্ত হয়েছে। মানবিকতার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বাংলাদেশ প্রশংসিত হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে শুক্রবারের (২২ জুলাই) রায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী কোর্ট মিয়ানমারের আপত্তি খারিজ করে দেবেন এবং মামলা চলমান থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট এবং আর্জেন্টিনার কোর্টে রোহিঙ্গা নিয়ে যে মামলা রয়েছে সেটিতে বাংলাদেশ শক্তভাবে সমর্থন দিচ্ছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন চালিয়েছিল তাদের বিচার প্রক্রিয়ার আওতায় আনা নিয়ে। সেটি হলে রোহিঙ্গারা রাখাইনে ফেরত যেতে সাহস পাবে।
দায়বদ্ধতা এবং বিচারের যে প্রক্রিয়াটা চালু রয়েছে সেটির প্রতি বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আশা করবো ২২ তারিখ যে রায়টি দেওয়া হবে সেটি রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাস প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।