ট্রেনের ছাদে যাত্রী নেওয়া বন্ধ করতে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি ও ছাদে যাত্রী নেওয়া বন্ধের বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রেলওয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, রেলে এত অব্যবস্থাপনা কেন থাকবে? কেন টিকিটে কালোবাজারি হবে? কেন মানুষ ট্রেনের ছাদে যাবে? আপনারা কি রেলকে গ্রাস করতে চাইছেন? এ অবস্থা চলতে পারে না।
ঢাবি শিক্ষার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য অবহিত করার পর বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
এ সময় আদালত আরও বলেন, “রেল আমাদের জাতীয় সম্পদ। সেই সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠে। ট্রেন থেকে পড়ে তো দুর্ঘটনাও হতে পারে। আর আপনারা নিশ্চিন্তে ঘুমান। এটা হতে পারে না। আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন।”
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
গত ২০ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা-যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির অবস্থানের কারণ সম্পর্কে জানতে চান হাইকোর্ট। দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে এ তথ্য জানাতে বলেন আদালত। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি হাইকোর্টকে অবহিতকালে আদালত উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
রেলওয়ে প্রশাসনের দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা সংস্কারের জন্য ছয় দফা দাবি নিয়ে গত ৮ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে আসছিলেন মহিউদ্দিন রনি। তার দাবিগুলো হলো- ই-টিকিটিং প্ল্যাটফর্মে (Shohoz.com) যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা, টিকিট বিক্রির কালোবাজারি প্রতিরোধ করা, অনলাইনে টিকিট বুকিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের টিকিট কেনার সহজ ও স্বচ্ছ উপায় তৈরি করা, জনসাধারণের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো, ট্রেনের টিকেট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ এবং ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অন্যান্য পরিষেবা নিশ্চিত করা।